অর্কদীপ রায়।-নিজস্ব চিত্র
পরীক্ষার আগে ‘বন্ধুদের কাছ থেকে নোট আনতে যাচ্ছি’ বলে শনিবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বছর একুশের অর্কদীপ রায়। বেলেঘাটার গভর্নমেন্ট কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সেরামিক সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্র আর বাড়ি ফেরেননি। মোবাইলে ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। রবিবার অর্কদীপের মোবাইল থেকে ফোন এলেও সেই স্বর তাঁর ছেলের নয় বলে জানান ওই ছাত্রের মা।
বালি জি টি রোডের বাসিন্দা অর্কদীপের পরিবার শনিবার রাতেই পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করে। তার ভিত্তিতে তদন্তে নামলেও এখনও পর্যন্ত অন্তর্ধান-রহস্যের কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।
অর্কদীপের বাবা অভয়শঙ্কর রায় কলকাতা পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। অভয়বাবু এবং তাঁর স্ত্রী সীমা রায় পুলিশকে জানান, অর্কদীপ শনিবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তিনি মাকে জানান, পরীক্ষার জন্য কিছু নোট দরকার। তাই তিনি কলেজে যাচ্ছেন বন্ধুদের কাছ থেকে নোট আনতে। কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চাঁদা দিতে হবে বলে তিনি মায়ের কাছে ১৫০০ টাকাও চান। কিন্তু তখন মায়ের কাছে অত টাকা ছিল না। ৫০০ টাকা নিয়েই বেরিয়ে যান অর্কদীপ।
পুলিশকে সীমাদেবী জানিয়েছেন, অর্কদীপ বাড়ি থেকে বেরোনোর আধ ঘণ্টার মধ্যে ১০টা ১০ মিনিট নাগাদ তিনি তাঁর মোবাইলে ফোন করেন। কিন্তু অর্কদীপকে পাওয়া যায়নি। পরে আবার ফোন করা হয়। কিন্তু মোবাইল ‘সুইচ অফ’ ছিল। সীমাদেবী ছেলের কলেজের বন্ধুদের ফোন করেন। কিন্তু তাঁরা জানান, অর্কদীপ কলেজে যাননি। চিন্তিত সীমাদেবী অন্য বন্ধু এবং আত্মীয়দের বাড়িতেও ফোন করেন। সকলেই জানান, অর্কদীপ তাঁদের কাছে যাননি, ফোনও করেননি। দিনভর খোঁজাখুঁজির পরে সীমাদেবী ও অভয়বাবু শিয়ালদহ জিআরপি-তে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ছেলের অন্তর্ধানের ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেন বালি থানাতেও।
রবিবার বেলা ২টো নাগাদ অর্কদীপের মোবাইল থেকে একটি ফোন আসে সীমাদেবীর মোবাইলে। সেই ফোনে একটি ছেলে ‘মা মা’ বলে চিৎকার করলেও সেটি অর্কদীপের স্বর নয় বলেই সীমাদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন। তিনি জানান, ছেলের মোবাইল থেকে যিনি ফোনটি করেছিলেন, তাঁর আশপাশ থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল। অর্কদীপের মা-বাবার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে রবিবারের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অর্কদীপের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে তাঁর হদিস পাওয়ার চেষ্টা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy