Advertisement
১৭ মে ২০২৪

দুষ্কৃতীকে দলে নয়, বিজেপির প্রতিনিধিদলকে ঘিরে বিক্ষোভ

দুষ্কৃতীকে দলে নেওয়া যাবে না। তৃণমূলের ‘হামলা’য় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মঙ্গলবার আরামবাগের পূর্ব কৃষ্ণপুর গ্রামে ঢুকে রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি দলকে শুনতে হল কয়েকশো গ্রামবাসীর এ দাবি। বিজেপি নেতাদের ঘিরে চলল বিক্ষোভ। উড়ে এল কটূক্তি, হুমকিও। বিক্ষোভে তৃণমূলই নেতৃত্ব দেয় বলে বিজেপি-র দাবি।

বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীরা। মঙ্গলবার আরামবাগে। ছবি: মোহন দাস।

বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীরা। মঙ্গলবার আরামবাগে। ছবি: মোহন দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৪
Share: Save:

দুষ্কৃতীকে দলে নেওয়া যাবে না। তৃণমূলের ‘হামলা’য় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মঙ্গলবার আরামবাগের পূর্ব কৃষ্ণপুর গ্রামে ঢুকে রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধি দলকে শুনতে হল কয়েকশো গ্রামবাসীর এ দাবি। বিজেপি নেতাদের ঘিরে চলল বিক্ষোভ। উড়ে এল কটূক্তি, হুমকিও। বিক্ষোভে তৃণমূলই নেতৃত্ব দেয় বলে বিজেপি-র দাবি।

মুণ্ডেশ্বরীর বালি খাদানের দখল নিয়ে রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় বিজেপি-তৃণমূলের সংঘর্ষ বাধে হরিণখোলা পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে। ওই এলাকায় বেআইনি বালি কারবারের প্রধান অভিযোগ রয়েছে জয়নাল খাঁ নামে এক নেতার বিরুদ্ধে। যিনি বারবার দল বদলে ২০১১-এ যোগ দেন কংগ্রেসে। সেই জয়নাল দলবল নিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন বলে খবর ছড়াতেই গোলমাল বাধে।

ক্ষয়ক্ষতি দেখতে দু’টি গাড়িতে বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক অসীম সরকার, দলের যুবমোর্চা নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রামকমল পাঠকেরা ছাড়াও জেলা নেতারা মঙ্গলবার সকালে হরিণখোলার রামমোহন সেতুর কাছে পৌঁছতেই বিক্ষোভ টের পান। পুলিশ থাকলেও তারা বিক্ষোভ সামলাতে পারেনি। একাধিক বার তৃণমূল নেতাকর্মীরা জয়নালকে দলে না নেওয়ার জন্য বিজেপি নেতাদের কাছে আবেদন জানান। জয়নালের বাড়ি ঘিরেও বিক্ষোভ হয়।

এলাকা পরিদর্শনের পরে অসীমবাবু বলেন, “গ্রামবাসীর ক্ষোভ রয়েছে। জয়নাল খাঁ বা তাঁর অনুগামীরা সত্যিই দুর্নীতিগ্রস্ত কি না, খতিয়ে দেখে তবেই দলে নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও বলেন, “সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় দলের প্রতিনিধিরা হরিণখোলায় যান। অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত কোনও ব্যক্তির স্থান বিজেপিতে নেই।”

জয়নালের বিরুদ্ধে ন’জনকে খুনের পুরনো মামলা ছাড়াও তোলাবাজি, বোমাবাজি-সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। পূর্ব কৃষ্ণপুরে বাড়ি হলেও তিনি গ্রামে থাকেন না। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। তিনি ‘পলাতক’।

এ দিন বিজেপি নেতাদের হাতের কাছে পেয়ে গ্রামবাসীরা সেই জয়নালের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দেন। বিজেপি প্রতিনিধি দলের দু’টি গাড়িকে মোটরবাইক নিয়ে অনুসরণ করার ফাঁকে এক দল যুবকের কটূক্তি, হুমকি উড়ে আসতে থাকে বিজেপি নেতাদের দিকে। এক বৃদ্ধ তৃণমূল সমর্থক বিজেপি নেতাদের বলেন, “আপনারা জয়নালের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন? আগে ওঁর বিরুদ্ধে ওঠা খুনের তদন্ত করুন। ওঁকে দলে নেবেন না। অশান্তি বাড়বে।”

এর পরেও গ্রামের নানা জায়গায় বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হয় বিজেপি নেতাদের। এক বিজেপি কর্মীকে মারধর ও তাঁর মোটরবাইক ভাঙার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জয়নালের বাড়িতে গিয়ে তাঁর আত্মীয়াদের কাছ থেকে বিজেপি নেতারা যখন তৃণমূলের ‘অত্যাচার’-এর বর্ণনা শুনছেন, তখনও ওই বাড়ির গ্রিল ভাঙার চেষ্টা করেন কিছু মহিলা-পুরুষ। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “রাজ্যে কিছু জায়গায় দুষ্কৃতী ও ঠ্যাঙাড়েদের ওরা (বিজেপি) দলে ভেড়াচ্ছে। সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ এ সব সহ্য করবেন কেন? তাই তাঁরা ওখানে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।”

তিনি কোন দলে আছেন, তা এ দিনও স্পষ্ট করেননি জয়নাল। তাঁর ক্ষোভ, “লোকজনকে বিভ্রান্ত করে তৃণমূল এ দিন বিজেপি-কে বিক্ষোভ দেখানোর ব্যবস্থা করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE