Advertisement
১৮ মে ২০২৪

বধূহত্যা, শাশুড়ি-ননদ-জায়ের যাবজ্জীবন

দাবিমতো বাড়তি পণ না দেওয়ায় এক বধূকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে তাঁর শাশুড়ি, ননদ এবং এক জায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। শুক্রবার আমতা আদালতের দায়রা বিচারক শ্যামলকুমার রায়চৌধুরী ভাণ্ডারগাছার ঘোষপুরের বাসিন্দা মনিজা বেগম, তার মেয়ে সাহানারা বেগম ও পুত্রবধূ হানুফা বেগমকে ওই সাজা শোনান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৯
Share: Save:

দাবিমতো বাড়তি পণ না দেওয়ায় এক বধূকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে তাঁর শাশুড়ি, ননদ এবং এক জায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। শুক্রবার আমতা আদালতের দায়রা বিচারক শ্যামলকুমার রায়চৌধুরী ভাণ্ডারগাছার ঘোষপুরের বাসিন্দা মনিজা বেগম, তার মেয়ে সাহানারা বেগম ও পুত্রবধূ হানুফা বেগমকে ওই সাজা শোনান।

২০১২ সালের ১৩ অক্টোবর বিকেলে মনিজার ছোট ছেলের স্ত্রী সাবিনা বেগমের (২২) আর্ত চিৎকার শুনে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পড়শিরা দেখেন, ঘরে আগুন জ্বলছে। দরজার বাইরে থেকে শিকল তোলা। তাঁরা সাবিনাকে গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানেই ঘটনার চার দিন পরে, ১৭ অক্টোবর মারা যান সাবিনা। তার পরেই ওই বাড়ির সকলে পালায়।

পুলিশ জানায়, মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে সাবিনা ৫০ হাজার টাকা বাড়তি পণ না দেওয়ার জন্য তাঁকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ আনেন মনিজা, সাহানারা এবং হানিফার বিরুদ্ধে। সাবিনার মা নাজিমা বেগম ওই বছরের ১৪ অক্টোবরই পুলিশের কাছে মেয়েকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন জামাই মইদুল ইসলাম-সহ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির আট জনের বিরুদ্ধে। সাবিনার মৃত্যুর পরে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্তদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন মারা যান সাবিনার শ্বশুর শেখ সোহরাব। পরে মইদুল-সহ অভিযুক্ত চার জন বেকসুর খালাস পান।

মামলার সরকারি আইনজীবী রমেশকুমার পাল বলেন, “সাবিনাকে খুনের দায়ে তাঁর শাশুড়ি, ননদ এবং এক জাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে আর ছ’মাস জেল।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আমতারই মহিষগোহা গ্রামের বাসিন্দা সাবিনার ২০১০ সালের ১৭ অক্টোবর বিয়ে হয় মইদুলের সঙ্গে। বিয়েতে সাবিনার পরিবারের তরফে পণ হিসেবে নগদ ৩০ হাজার টাকা এবং কিছু আসবাবপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও বাড়তি পণের দাবিতে সাবিনার উপরে শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতন চলছিল বলে অভিযোগ। মেয়ের মৃত্যুর পরই তাঁর শিশুকন্যাকে নিজের কাছে এনে রেখেছিলেন সাবিনার মা নাজিমা বেগম। এ দিন সাজা ঘোষণার সময়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন নাজিমা। মেয়ের খুনিদের সাজা হওয়ায় তিনি খুশি। বাড়ি ফেরার পথে তিনি বলেন, “প্রথম থেকে চেয়েছিলাম, মেয়ের খুনিদের যেন কঠিন সাজা হয়। তা-ই হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

daughter-in-law murder uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE