Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Firhad Hakim

কর আদায় শিকেয় তুলে পুকুর খুঁজতে কালঘাম ছুটছে পুর মূল্যায়ন বিভাগের

শহরের সমস্ত পুকুর ও জলাশয়কে মূল্যায়নের আওতায় এনে পুরসভার ওয়েবসাইটের তালিকায় তুলতে অনেক আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন মেয়র। ৩০ ডিসেম্বর ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

গত ডিসেম্বরের শেষে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশের পরে পুকুর পরিদর্শনের উপরেই বেশি করে জোর দিচ্ছেন ওই বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকেরা।

গত ডিসেম্বরের শেষে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশের পরে পুকুর পরিদর্শনের উপরেই বেশি করে জোর দিচ্ছেন ওই বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকেরা। ফাইল ছবি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০৩
Share: Save:

কর আদায়ের কাজ সামলাবেন, না পুকুর খুঁজে বেড়াবেন? সম্পত্তিকর আদায় করাটাই পুরসভার মূল্যায়ন (অ্যাসেসমেন্ট) বিভাগের প্রধান কাজ। চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে আর আড়াই মাস বাকি। এই সময়ে সম্পত্তিকর আদায়ের উপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়। যদিও গত ডিসেম্বরের শেষে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশের পরে পুকুর পরিদর্শনের উপরেই বেশি করে জোর দিচ্ছেন ওই বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকেরা।

শহরের সমস্ত পুকুর ও জলাশয়কে মূল্যায়নের আওতায় এনে পুরসভার ওয়েবসাইটের তালিকায় তুলতে অনেক আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন মেয়র। কিন্তু সেই কাজ এখনও না হওয়ায় গত ৩০ ডিসেম্বর ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সে দিন ঠাকুরপুকুরের এক বাসিন্দার অভিযোগের সূত্রে তিনি জানতে পারেন, শহরে পুকুর ও জলাশয়ের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এখনও শুরুই হয়নি। ঠাকুরপুকুরের একটি ঐতিহ্যমণ্ডিত পুকুর ভরাট হয়ে যাচ্ছে বলে খবর পান তিনি। পুরসভার খাতায় ওই পুকুরেরনাম না থাকায় ক্ষুব্ধ মেয়র বলেন, ‘‘অ্যাসেসমেন্ট বিভাগ খুব ঢিলেঢালা ভাবে কাজ করছে। আমি দু’-তিন দিন সময় দেব। তার পরেও কাজ না হলে পুরো বিভাগকে শো-কজ় করব।’’ মেয়রের হুঁশিয়ারি, ‘‘যাঁরা কাজ করবেন না, তাঁরা পুরসভায় কাজ করতে পারবেন না। হয়তাঁরা থাকবেন, না হয় আমি থাকব। আসি যাই, মাইনে পাই— এই মনোভাব নিয়ে কাজ করা চলবে না। পুরকর্মীরা মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। তাঁরা মানুষের করের টাকায় বেতন পান। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে তাঁদের।’’

পুরসভার মূল্যায়ন বিভাগ সূত্রের খবর, ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে ফিরহাদ ওই বিভাগকে এক হাত নেওয়ার পরে বিশেষ কমিশনার (কর ও রাজস্ব) সোমনাথ দে গোটা বিভাগের কর্মী-আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলেছিলেন, খুব দ্রুত কলকাতা পুরসভা এলাকার সমস্ত বড় পুকুরের মূল্যায়নের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। সেই সঙ্গে চলতি মাসের মধ্যে শহরের সমস্ত ছোট-বড় জলাশয়ের মূল্যায়নও করে ফেলতে হবে।

মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী, ঠিক যে ভাবে জমির মাপজোক করে মূল্যায়ন করা হয়, সে ভাবেই শহরের সমস্ত পুকুর ও জলাশয়ের মূল্যায়নের কাজ শুরু করেছেন কর-রাজস্ব বিভাগের কর্মীরা। অর্থাৎ, পুকুর বা জলাশয়ের ঠিকানা-সহ যাবতীয়তথ্য মূল্যায়নের নথিতে থাকবে। মেয়রের যুক্তি, ‘‘পুকুর ও জলাশয়ের মূল্যায়নের কাজ শেষ হলে শহরের পরিবেশ রক্ষা করা অনেকটাই সহজ হবে। পরিবেশ বাঁচাতেই সমস্ত জলাশয়ের সব তথ্য কলকাতা পুরসভার খাতায় নথিভুক্ত করা হবে। এতে পুকুর বোজানোর প্রবণতাওবন্ধ করা যাবে।’’

পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘একেই এখন অর্থবর্ষেরশেষ দিক। কর সংগ্রহ করাটাই অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের কাজ।কিন্তু মেয়রের নির্দেশে পুকুর খুঁজতে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দফতরের কর্মীরা।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, মূল্যায়ন বিভাগের বিভিন্ন ইউনিটে পুকুর পরিদর্শনের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কোথাও আবার পুকুরের মালিককে খুঁজে না পাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন বিভাগের আধিকারিকেরা। সব মিলিয়ে অর্থবর্ষের শেষ লগ্নেপুকুর নিয়েই হিমশিম খাচ্ছে পুর মূল্যায়ন বিভাগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Firhad Hakim Kolkata Mayor Property Tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE