ভিড় বাসের যাত্রীরা দেখছিলেন সাদা পোশাক পরা তিন ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে অন্য এক জনের থেকে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। কথাবার্তা বলতে বলতেই যাঁর কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে, তাঁর গালে এক চড় কষালেন ওই তিন জনের এক জন। বেআইনি ভাবে ওই ব্যক্তি অন্যের থেকে টাকা নিয়েছেন বলে চিৎকার করতে থাকেন তিন জন। ঝামেলা এড়াতে শেষে চার জনকেই বাস থেকে নামিয়ে দেন কন্ডাক্টর। তার পরেও চলতে থাকে বচসা। শেষে পুলিশ এসে সকলকে থানায় নিয়ে গেলে জানা যায় দুষ্কৃতীরা আসলে পুলিশ সেজে এক ব্যবসায়ীর টাকা লুঠের চেষ্টা করছিল।
মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ। বাস থেকে নামার পরে যশোর রোডে সুকান্তনগরের কাছে ফের ওই চার জনের মধ্যে বচসা শুরু হলে এগিয়ে আসে পুলিশের একটি গাড়ি। চার জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দর থানায়। দেখা যায়, যাঁর কাছ টাকা থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল তিন জন, তিনি বসিরহাটের বাসিন্দা এক মাছ ব্যবসায়ী। আর ওই তিন জন আসলে দুষ্কৃতী। পুলিশ সেজে তারা শ্যামল বিশ্বাস নামে ওই ব্যবসায়ীর টাকা লুঠের চেষ্টা করছিল। গোপাল রায়, মীর আজিম আলি ও উদ্দীপ্ত বিশ্বাস ওরফে সোনা নামে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর থানার পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, শ্যামলবাবু তখন বাসে করে বসিরহাটে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর কাছে ছিল ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। এ দিকে কোনও ভাবে সেই খবর পেয়ে শ্যমলবাবুর পিছু নেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করেছে যে পুলিশ সেজে ভয় দেখিয়ে তারা ওই ব্যবসায়ীর টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করেছিল।
শ্যামলবাবু জানান, ব্যবসার কাজে তিনি বড়বাজার গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বেলগাছিয়া থেকে বসিরহাটের বাসে উঠি। কিছুক্ষণ পরেই ওই তিন জন আমার দিকে এগিয়ে আসে। তারা নিজেদের পুলিশ বলে দাবি করে এবং চিৎকার করে বলতে থাকে যে আমি বেআইনি ভাবে অন্যের থেকে টাকা নিয়ে যাচ্ছি। তখনই বুঝেছিলাম কোনও গোলমাল হচ্ছে। বাস থেকে প্রথমে নামতে চাইনি। কিন্তু কন্ডাক্টর ও অন্যান্য যাত্রীদের চাপে নেমে যেতে বাধ্য হই।’’
বিমানবন্দর থানার পুলিশ জানায়, সুকান্তনগরে বাস থেকে নামার পরেই অভিযুক্ত তিন যুবক শ্যামলবাবুকে ঘিরে ধরে টাকা লুঠের চেষ্টা করে। ভয় পেয়ে ওই ব্যবসায়ী রাস্তার উপরে চিৎকার করে লোকজনের সাহায্য চান। ঘটনাচক্রে সেই সময়ে পুলিশের একটি টহলদারি গাড়ি যাচ্ছিল ওই রাস্তা দিয়ে। পুলিশ কর্মীরা আসতেই দুষ্কৃতীরা ফের শ্যমলবাবুকেই ‘অপরাধী’ প্রমাণের চেষ্টা করে। এর পরে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পুলিশের গাড়িটি চার জনকেই থানায় নিয়ে যায়। পরে দেখা অভিযুক্তদের তিন জনের কাছে ভোজালি, আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি রয়েছে। এর পরেই জানা যায় গোটা ঘটনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy