প্রতীকী চিত্র।
কয়েক দিনের ব্যবধানে রাজারহাট গ্রামীণ এলাকায় করোনার সংক্রমণ এক লাফে প্রায় চার গুণ বাড়ল। সাধারণ বাসিন্দারা তো বটেই, প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিদের একটি বড় অংশও সংক্রমিত। পরিস্থিতি ভয়াবহ রেকজোয়ানি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই আক্রান্ত হওয়ায় পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
রাজারহাটের রাইগাছি, ভাতেন্ডা, রেকজোয়ানি, কাজিয়ালপাড়া, কলাবেড়িয়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে অতিমারির তৃতীয় ঢেউ। প্রশাসন সূত্রের খবর, কিছু দিন আগেও ওই সব এলাকায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৫০-এর নীচে। সেই জায়গায় এখন তা ২০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
রাজারহাটের বিডিও ঋষিকা দাস নিজে করোনায় আক্রান্ত। বৃহস্পতিবার রাজারহাট থানার আইসি জামালউদ্দিন মণ্ডলেরও কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। রেকজোয়ানি গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রের খবর, যাঁরা পরীক্ষা করাতে আসছেন, সিংহভাগেরই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে। যাঁদের উপসর্গ রয়েছে, তাঁদেরই কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। যাঁরা উপসর্গহীন কিংবা মৃদু উপসর্গযুক্ত, তাঁদের এক সপ্তাহের জন্য হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে রাজারহাটের এই গ্রামীণ এলাকাগুলিতে ২০-২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রাজারহাটের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সব্যসাচী শিকদার জানান, হাসপাতালে রোগীর ভিড় উপচে পড়ছে। প্রতিদিনই জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসছেন গ্রামের মানুষ।
নিউ টাউনের একেবারে লাগোয়া এই রাজারহাট ব্লক। সেখানে রয়েছে পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত। রাজারহাট-বিষ্ণুপুর ১ ও ২, পাথরঘাটা, চাঁদপুর এবং জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে সংক্রমণের লেখচিত্র অন্য সব জায়গার মতোই ঊর্ধ্বমুখী। প্রশাসন সূত্রের খবর, বিডিও এবং রাজারহাট থানার আইসি-র সংস্পর্শে আসা লোকজনকে হোম আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজারহাট থানা ও ব্লক প্রশাসনের লোকজনও অনেকে কোভিডে আক্রান্ত বলে খবর এসেছে।
রেকজোয়ানি গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে সেখানে দু’জন চিকিৎসক, তিন জন নার্স, এএনএম, গ্রুপ-ডি কর্মী, আশাকর্মী-সহ ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত। অথচ, ওই এলাকায় অন্তত তিন লক্ষ মানুষের জন্য হাসপাতাল এই একটিই। দু’টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও করোনা পরীক্ষা হচ্ছে গ্রামীণ হাসপাতালেই। তাই একসঙ্গে এত কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বাকি চিকিৎসক এবং অন্য কর্মীরা।
রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর জানান, করোনা-বিধি মানাতে পুলিশকে কড়া ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে। তা নিয়ে প্রচারও চলছে। তবে এখনই দোকান-বাজার বন্ধের কোনও পরিকল্পনা তাঁদের নেই বলেই জানিয়েছেন প্রবীরবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy