Advertisement
১৬ মে ২০২৪

ভাগ্য খুলবে কি ‘কলকাতা আই’-এর

‘কলকাতা আই’ কি এ বার ছাড়পত্র পাবে? সম্প্রতি গঙ্গা নিয়ে পরিবেশ আদালতে জমা পড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের পরে এমন আশাই করছেন প্রশাসনের একাংশ।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১১
Share: Save:

‘কলকাতা আই’ কি এ বার ছাড়পত্র পাবে? সম্প্রতি গঙ্গা নিয়ে পরিবেশ আদালতে জমা পড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টের পরে এমন আশাই করছেন প্রশাসনের একাংশ।

‘লন্ডন আই’-এর ধাঁচে গঙ্গার পাড়ে ‘কলকাতা আই’ গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গঙ্গা দখল করে নির্মাণ এবং তার জেরে গঙ্গার পা়ড় ভাঙছে, এই অভিযোগ তুলে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তার পরিপ্রেক্ষিতে ‘কলকাতা আই’-এর ভবিষ্যতের উপরে বড় প্রশ্নচিহ্ন ঝুলতে শুরু করে। গঙ্গার পরিস্থিতি কী তা জানতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা নদী-বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রকে মাথায় রেখে একটি কমিটি গঠন করেছিল আদালত। কমিটি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে, কলকাতায় গঙ্গা দখল করে নির্মাণ হয়নি। নদীর পাড়েরও কোনও বদল হয়নি।

ওই রিপোর্টের পরেই প্রশাসনের একাংশ মনে করছেন, ‘কলকাতা আই’ নির্মাণের ফলে গঙ্গার পাড় ভাঙতে পারে, এই আশঙ্কা খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফলে নির্মাণের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন আর নেই। যদিও প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলছেন, ‘‘এ ব্যাপারে শেষ সিদ্ধান্ত আদালতই নেবে। তা না হওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।’’ ওই কর্তা জানান, ‘কলকাতা আই’ নির্মাণ নিয়ে পরিবেশগত সমীক্ষাও করানো হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে এ-ও বলা হয়েছে, ফেয়ারলি প্লেস জেটির কাছে বাঁধানো পাড়ের একাংশ ভেঙে পড়েছে। তবে তার সঙ্গে মিলেনিয়াম পার্কের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই ধরনের ভাঙন আটকানো উচিত ও তার জন্য সুপারিশও করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্বামীহারাকে বাঁচার পথ দেখাল পিজি

সুভাষবাবু অবশ্য এই রিপোর্ট নিয়ে আদালতেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে, বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট বিভ্রান্তিকর এবং পক্ষপাতদুষ্ট। জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, সুভাষবাবুকে তাঁর আপত্তি লিখিত ভাবে জমা দিতে হবে।

সুভাষবাবু অবশ্য শুধু মিলেনিয়াম পার্কই নয়, গঙ্গায় ভাসমান একটি হোটেল এবং নিমতলা শ্মশানের রবীন্দ্র স্মৃতি উদ্যান নিয়েও আপত্তি তুলেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, এগুলি গঙ্গা দখল করে গড়ে উঠেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, ভাটার সময়ে জল যে পর্যন্ত থাকে সেটাই নদী। এবং ভাটার জলস্তর থেকে জোয়ারের জল যতটা ওঠে, সেটা নদীর পাড়। সেই হিসেবে কলকাতায় নদী দখল করে নির্মাণ হয়নি। কারণ মিলেনিয়াম পার্ক, নিমতলা ঘাট—সর্বত্রই নির্মাণ হয়েছে ভাটা ও জোয়ারের জলস্তরের মাঝামাঝি এলাকায় অর্থাৎ নদীর পাড়ে।

যদিও সুভাষবাবুর পাল্টা যুক্তি, গঙ্গায় শীত, গ্রীষ্ম এবং বর্ষায় জলস্তরের পরিবর্তন হয়। ভাটার সময়েও জলস্তর বদলায়। তা হলে নদীবক্ষেরও কি পরিবর্তন হবে? ‘‘এ প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর কিন্তু রিপোর্টে নেই,’’ বলছেন এই প্রবীণ পরিবেশকর্মী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Eye
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE