Advertisement
১৮ মে ২০২৪

বিপুল বকেয়া আদায়ে বেলাগাম খরচে রাশ

মাঝেমধ্যেই এমন নির্দেশ জারি করে থাকেন পুর কমিশনার। কিন্তু তা মানাই হয় না। এ বার পুর কমিশনার পুরসভার প্রত্যেক কন্ট্রোলিং অফিসারকে জানিয়ে দিয়েছেন, অবিলম্বে এই নির্দেশ পালন করতে হবে।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০১:৫০
Share: Save:

মাঝেমধ্যেই এমন নির্দেশ জারি করে থাকেন পুর কমিশনার। কিন্তু তা মানাই হয় না। এ বার পুর কমিশনার পুরসভার প্রত্যেক কন্ট্রোলিং অফিসারকে জানিয়ে দিয়েছেন, অবিলম্বে এই নির্দেশ পালন করতে হবে। শুধু তাই নয়, নির্দেশ পালন করা হল কি না, তা পুর কমিশনারকে জানাবেন সংশ্লিষ্ট কন্ট্রোলিং অফিসার।

ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, গাড়ির তেলের খরচ কমাতে হবে, ওভারটাইমে রাশ টানতে হবে। লাগাম দিতে হবে ঠিকা কর্মী নিয়োগে। কমাতে হবে টিফিন ও রাহা খরচও। নির্দেশ কার্যকর করায় কোনও মতেই আর ঢিল দেওয়া যাবে না।

খরচ ছাঁটতে হঠাৎ এমন মরণ কামড় কেন পুর কমিশনারের?

পুরসভা সূত্রের খবর, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে কলকাতায় এলাকাভিত্তিক কর চালু হয়েছে। তবে নতুন ওই ব্যবস্থায় ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কমবে বলে আশঙ্কা পুরকর্তাদের। এমনিতেই পুরসভার ভাঁড়ারে বেশ টান। তাই চলতি বছরের শুরুতেই এক দফা খরচ কমানোর নির্দেশ জারি হয়েছিল। তার পরে সম্পত্তিকরের নতুন ব্যবস্থায় এতটা ঘাটতির শঙ্কা বেসামাল করে দিয়েছে পুর-কর্তৃপক্ষকে। পুর কমিশনারের নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, বকেয়া কর আদায় করতে ‘ঝাঁপ’ দিতে হবে পুর অফিসার ও কর্মীদের।

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৬-’১৭ আর্থিক বছরে সম্পত্তিকর বাবদ পুর প্রশাসনের আদায় হয়েছিল প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। সেই হিসেবেই পুরসভার ২০১৭-’১৮ সালের বাজেট হয়েছে। এলাকাভিত্তিক কর আদায় প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে চলতি আর্থিক বছরের গোড়ায়। তা কার্যকর করতে গিয়েই পুর মূল্যায়ন দফতরের অফিসারেরা দেখেছেন, যে পরিমাণ সম্পত্তিকর আদায় হতো এত দিন, নতুন ব্যবস্থায় তা অনেকটাই কমে যাবে।

পুরসভার এক আমলার কথায়, ‘‘আয়ের উৎস বাড়াতে পুর অফিসার ও কর্মীদের ‘অতি তৎপর’ হতে বলা হয়েছে।’’ ওই আমলা হিসেব দিয়ে জানিয়েছেন, সব ধরনের কর, লাইসেন্স-ফি, বিল্ডিং অনুমোদন ফি বাবদ শহরের নাগরিকদের কাছে পুরসভার পাওনা প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। সেই বকেয়া আদায়ে জোর দিতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট করদাতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাগাদা করতে হবে। আয় বাড়াতে খরচে রাশ টানতেও কঠোর হতে চায় পুর প্রশাসন।

পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিক জানান, গাড়ির তেল বাবদ বছরে খরচ হয় প্রায় ৩০ কোটি টাকা। মাসে ৩৫ কোটি টাকা যায় শুধু বিদ্যুতের বিল মেটাতে! এমন অনেক কর্মী আছেন যাঁদের এক মাসের ওভারটাইমের টাকা বেতনের থেকে বেশি। সে সব খরচেই লাগাম টানতে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তেল খরচও। পুরসভার বিভিন্ন দফতরে খাটা লরির তেলও নয়ছয় হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ঠিক হয়েছে, তাতে রাশ টানতে একটি তেল সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করবে পুরসভা।
ওই সংস্থার কয়েকটি রিটেল শপে কার্ড দেখিয়ে তেল নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE