Advertisement
০৮ মে ২০২৪

অটো-জুলুম বন্ধ করবে কে, প্রশ্ন ক্ষুব্ধ যাত্রীদের

ইচ্ছেমতো ভাড়া চাওয়া, গন্তব্যস্থল পর্যন্ত না যাওয়ার মতো হাজারো অভিযোগও অটোচালকদের একাংশের বিরুদ্ধে আকছার ওঠে। সোমবার এমনই এক ঘটনায় উল্টোডাঙা মোড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন যাত্রীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:৪৪
Share: Save:

রাস্তার যত্রতত্র যাত্রী তুলতে ইচ্ছামতো ব্রেক কষার অভিযোগ অটোচালকদের বিরুদ্ধে নতুন কিছু নয়। মঙ্গলবার বরাহনগরের ঘটনা আরও একবার সেই অভিযোগকেই সামনে এনেছে। পাশাপাশি, ইচ্ছেমতো ভাড়া চাওয়া, গন্তব্যস্থল পর্যন্ত না যাওয়ার মতো হাজারো অভিযোগও অটোচালকদের একাংশের বিরুদ্ধে আকছার ওঠে। সোমবার এমনই এক ঘটনায় উল্টোডাঙা মোড়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন যাত্রীরা। এর পরেই এ দিন ওই এলাকায় অটোর জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের দেওয়া হল স্থানীয় কাউন্সিলরের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ও উল্টোডাঙা থানার নম্বর। তাতে বলা হয়েছে, অটো নিয়ে অভিযোগ থাকলে অভিযুক্ত অটোর নম্বর প্লেটের ছবি তুলে তাঁরা ওই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠাতে পারেন। অথবা সরাসরি থানায় ফোন করতে পারেন।

সামগ্রিক এই ঘটনাপ্রবাহ দেখে যাত্রীদের প্রশ্ন, শুধু হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর বিলি করে বা চালকদের নিয়ে মাঝেমধ্যে ‘লোক দেখানো’ কর্মশালা করে কি অটোর জুলুমে লাগাম পরানো যাবে? যে ভাবে বেপরোয়া গতিতে অটো চালান চালকেরা, তাতে প্রায়ই বড় দুর্ঘটনা যে ঘটে না সেটাই আশ্চর্যের। পুলিশ বা অটো ইউনিয়ন সব দেখেও কী ভাবে চুপ করে থাকে?

নিত্যযাত্রীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, উল্টোডাঙা-সল্টলেক রুটে অটোর দৌরাত্ম্যের অন্যতম প্রধান কারণ ওই রুটে ক্রমবর্ধমান অটোর সংখ্যা। ঠিক কত অটো চলে, তার নির্দিষ্ট হিসেব নেই পুলিশ, অটো ইউনিয়ন, স্থানীয় কাউন্সিলর বা নেতাদের কাছেও। পুলিশ বলছে, সল্টলেক-উল্টোডাঙা রুটে অটো চলে তিন হাজারের মতো। উল্টোডাঙা অটোরিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের বক্তব্য, সেই সংখ্যা চার হাজার। আবার কাউন্সিলর ও নেতারা বলছেন, ওই রুটে অটো চলে হাজার পাঁচেক। যার সিংহভাগের উপরে কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। যাত্রীদের আরও অভিযোগ, অধিকাংশ অটোয় ভাড়ার তালিকা থাকে না। নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে গিয়ে চালকদের দাঁড়ানোরও বালাই নেই।

উল্টোডাঙা থেকে সেক্টর ফাইভে অফিসে অটোয় যাতায়াত করেন অমিতাভ চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সল্টলেক-উল্টোডাঙা রুটে ভাড়া বাড়ার কোনও সময় নেই। এক পশলা বৃষ্টি হলেই পাঁচ টাকা বেড়ে যায়।’’ শুধু তাই নয়। উল্টোডাঙা-সল্টলেক রুটের অটোয় নির্দিষ্ট রুট কেন লেখা থাকবে না, সেই প্রশ্নও তুলছেন যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, কোনও অটো যাচ্ছে ওয়েবেল মোড়, কোনওটি আবার টেকনোপলিস। কিন্তু কোন অটো কোথায় যাচ্ছে, তা নির্দিষ্ট ভাবে লেখা না থাকায় বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে।

পুলিশও মানছে, উল্টোডাঙা মোড়ে সমস্ত অটোকে স্ট্যান্ডে দাঁড় করানো কার্যত অসম্ভব। উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি তন্ময় উপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রচুর মানুষ চাকরি সূত্রে সল্টলেক এবং নিউ টাউনে যাতায়াত করেন। তাঁরা নামেন বিধাননগর রোড স্টেশনেই। ফলে অটোও অনেক বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় অটো দাঁড়ানোর পরিকাঠামো নেই।’’ তবে তিনি জানিয়েছেন, অটোর গায়ে নির্দিষ্ট রুট লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে সব অটোচালকদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Auto Auto Drivers Passengers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE