প্রতীকী ছবি।
শহরের আটটি এটিএমে কারসাজি করে প্রায় দু’কোটি টাকা লুটের ঘটনায় ইতিমধ্যেই কলকাতা ও সুরাত থেকে গ্রেফতার হয়েছে চার অভিযুক্ত। এ বার ওই ঘটনায় জড়িত আরও তিন জনকে সোমবার সন্ধ্যায় কৈখালি থেকে গ্রেফতার করল বিধাননগর পুলিশ। ধৃতদের নাম মহম্মদ ওয়াকিল, সন্দীপ গুপ্ত ওরফে সোনু এবং অমিত গুপ্ত ওরফে অমৃত। তারা দিল্লি এবং পঞ্জাবের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা, ৪০০ মার্কিন ডলার, জাল আধার ও প্যান কার্ড, ৬টি মোবাইল, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ছ’টি কার্ড, ল্যাপটপ, দু’টি পাসপোর্ট এবং একটি চুক্তিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাদের আজ, মঙ্গলবার আদালতে তোলা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতায় এটিএম জালিয়াতি কাণ্ডে যে চক্রটি জড়িত, ধৃত তিন জন সেই চক্রেরই সদস্য। গত ৩০ মে নারায়ণপুর থানা এলাকার ডিরোজিও কলেজের উল্টো দিকে একটি এটিএম থেকে ২১ লক্ষ টাকা উধাও হয়। তদন্তে নেমে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা এটিএমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। সংগ্রহ করা হয় ওই ব্যাঙ্কের এক সপ্তাহের লেনদেনের তথ্যও। তার থেকে সন্দেহজনক কয়েকটি অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরে দিল্লি যায় পুলিশের একটি দল। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে মহম্মদ ওয়াকিলকে চিহ্নিত করা হয়। যাবতীয় তথ্য একত্রিত করে সোমবার ধরা হয় অভিযুক্তদের। ধৃতদের প্রাথমিক জেরা করে পুলিশ জেনেছে, তারা কলকাতায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকত। পুলিশি নজরদারি এড়াতে প্রতিদিন সিম কার্ড বদল করত।
এ দিকে, এটিএম-কাণ্ডের জট খুলতে এখন কলকাতা পুলিশের নজরে ভাড়া নেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তদন্তকারীরা জেনেছেন, এটিএমের কারসাজি করে হাতানো টাকা অভিযুক্তেরা প্রথমেই কলকাতার বাইরে নিয়ে যায়নি। বরং, সেই টাকা কলকাতার বাসিন্দা কয়েক জনের ব্যাঙ্কে রাখা হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মালিকদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময়ে অর্থাৎ মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধ চলছিল। ওই সব জায়গায় চলছিল নাকা তল্লাশিও। তাই গোয়েন্দাদের ধারণা, ধরা পড়ার ভয়ে লুটের টাকা শহরের বাইরে নিয়ে যায়নি দুষ্কৃতীরা। তদন্তকারীদের আরও অনুমান, প্রতিটি এটিএম থেকে লুট করা টাকা রাখার জন্য স্থানীয় ভাবে একটি করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়েছিল অভিযুক্তেরা। তাঁদের ধারণা, অভিযুক্তদের থাকার জায়গা এবং রক্ষীবিহীন এটিএমের সন্ধানও দিয়েছিলেন ওই বাসিন্দারা। পুলিশ সূত্রের খবর, ‘ডার্ক ওয়েব’ ব্যবহার করে অভিযুক্তেরা ব্ল্যাক বক্স কিনেছিল। যা ব্যবহার করে এটিএমের সঙ্গে ব্যাঙ্কের সার্ভারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy