Advertisement
০২ মে ২০২৪

নার্স-বিক্ষোভ, প্রশ্নে ‘মনুষ্যত্ব’

গুরুতর অসুস্থকে আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়ার হুইলচেয়ার দেওয়াকে কেন্দ্র করে গোলমালের সূত্রপাত। গত দু’-তিন দিন ধরে দফায় দফায় তা নিয়ে বিক্ষোভ চলেছে। সেই বিক্ষোভের জেরেই বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার, অধ্যক্ষ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার-সহ কর্তাদের ঘেরাও করেন জনা ষাটেক নার্স। গভীর রাত পর্যন্ত সেই ঘেরাও ওঠেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০১:১৫
Share: Save:

গুরুতর অসুস্থকে আইসিইউ-তে নিয়ে যাওয়ার হুইলচেয়ার দেওয়াকে কেন্দ্র করে গোলমালের সূত্রপাত। গত দু’-তিন দিন ধরে দফায় দফায় তা নিয়ে বিক্ষোভ চলেছে। সেই বিক্ষোভের জেরেই বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার, অধ্যক্ষ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার-সহ কর্তাদের ঘেরাও করেন জনা ষাটেক নার্স। গভীর রাত পর্যন্ত সেই ঘেরাও ওঠেনি।

বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট বিরক্ত এবং উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে স্বাস্থ্য-পরিষেবার মানবিক মুখ তুলে ধরার উপরে সব চেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন, সেখানে এক জন প্রবীণ রোগীকে একটি হুইলচেয়ার দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে কর্তব্যরত নার্সরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিতর্কে জড়াবেন কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দিলে হাসপাতাল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২৭ মার্চ গভীর রাতে। অধীর মণ্ডল নামে এক প্রবীণ রোগীকে বাঁকুড়া থেকে ‘বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজি’ (বিআইএন)-তে ভর্তির জন্য আনা হয়। ঘটনাচক্রে তিনি তৃণমূলের চিকিৎসক-কাউন্সিলর শান্তনু সেনের শ্বশুরমশাই। হাসপাতাল সূত্রের খবর, চোট পেয়ে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অস্ত্রোপচার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিআইএন-এর ইমার্জেন্সিতে সেই সময়ে কোনও ট্রলি বা হুইলচেয়ার না থাকায় পাশেই এসএসকেএম ইমার্জেন্সি থেকে হুইলচেয়ার নিতে গিয়েছিলেন রোগীর বাড়ির লোকজন।

তাঁদের অভিযোগ, সেই সময়ে এসএসকেএম ইমার্জেন্সির কর্তব্যরত নার্স হুইলচেয়ার থাকা সত্ত্বেও দিতে চাননি এবং দাবি করেছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নাকি বিআইএন-এর রোগীদের জন্য ট্রলি বা হুইলচেয়ার দিতে বারণ করেছেন। সেই কথা শুনে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সেবন্তী মুখোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে যান। বিক্ষোভকারী নার্সদের তরফে ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘সেবন্তী কর্তব্যরত নার্সদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন। তাঁদের পোশাক খুলে নেওয়ার হুমকি দেন এবং গালাগালি দেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘কর্তৃপক্ষ এক দিকে আমাদের বিআইএন-এর রোগীদের ট্রলি দিতে বারণ করে রাখবেন, অথচ কোনও রাজনৈতিক নেতার আত্মীয় ভর্তি হতে এলেই কর্তৃপক্ষের রং বদলে যাবে। আমরা দোষী হয়ে যাব। এটা বরদাস্ত করব না।’’

সেবন্তীর বক্তব্য, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নার্সদের হুইলচেয়ার দিতে বারণ করেননি। মুখ্যমন্ত্রী যে মানবিক মুখ তুলে ধরতে বলছেন, তা তাঁরা মানছেন না। নার্সদের সঙ্গে কোনও দুর্ব্যবহার করা হয়নি। রোগীর আবার আমরা-ওরা কী? বিআইএন-এর রোগী হলে এসএসকেএম থেকে হুইলচেয়ার পাবে না, এটা হয় নাকি!’’ স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সচিব তমাল ঘোষ রাতে বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। আশা করি আলোচনার মাধ্যমে মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

unavailability Wheelchair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE