মর্মান্তিক: ঘটনাস্থলে পড়ে ভাত ও পেঁয়াজের অবশিষ্টাংশ। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
রাজারহাটের গ্রামে এক মহিলা খুন হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। একটি খুনের মামলা রুজু করেছে রাজারহাট থানা। বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তার ভিত্তিতে মামলায় ধর্ষণের ধারা যুক্ত করা হতে পারে।
পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন একটি গ্রামে বুধবার বিকেলে একটি বাঁশঝাড় থেকে পঞ্চাশোর্ধ্বা ওই মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ মেলে। পরিবার ও গ্রামবাসীদের ধারণা, তাঁকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, মহিলার পা বাঁধা ও হাতে ছেঁকার দাগ ছিল। তাঁকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলেই সন্দেহ তাঁদের। যা এক জনের পক্ষে সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।
বুধবার মহিলা যখন খেতে কাজ করছিলেন, তখন তাঁকে পান্তাভাতও পেঁয়াজ দিয়ে আসেন তাঁর মেয়ে। এ দিন ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল পান্তাভাত ও পেঁয়াজের অবশিষ্টাংশ। মৃতার ছেলে ও বৌমা জানান, স্বামী গত দু’বছর ধরে শয্যাশায়ী থাকায় মহিলানিজেই চাষের কাজ করতেন। ছেলে বলেন, ‘‘সন্ধ্যাবেলাও মহিলারা খেতে কাজ করেন। আগে কখনও এমন হয়নি। মায়ের উপরে ভয়াবহ অত্যাচার হয়েছে। ধর্ষণ করে খুন করার পরে মা বেঁচে আছে কি না দেখতে বাঁ হাতে সিগারেটেরছেঁকাও দেওয়া হয়।’’ মৃতার পরিবার জানায়, যে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মহিলা খেতে কাজ করছিলেন, তা দিয়েই তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। অস্ত্রটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। রক্ত ও চুল লাগা একটি মুগুরও মিলেছে।
এ দিন ওই গ্রামে বেড়ে গিয়েছে পুলিশি টহলদারি। দুপুরে পুলিশের পদস্থ আধিকারিকদেরও ঘটনাস্থলে দেখা যায়। মৃতার দেহ যেখানেপড়ে ছিল, তার আশপাশে কলাগাছের বাগান। সিসি ক্যামেরা না থাকায় সমস্যায় পড়েছে পুলিশ। লোকালয় থেকে জায়গাটি প্রায় দেড়কিলোমিটার দূরে। চারপাশে কলা এবং আখের বাগান। সাধারণ মানুষের পক্ষে সেখানে হেঁটে যাতায়াতকরা প্রায় অসম্ভব। গ্রামবাসীদের ধারণা,দুষ্কৃতীরা ওই পথেই পালিয়েছে।
এ দিন গ্রামের মহিলারাজানান, তাঁরা আতঙ্কিত। এক বধূর কথায়, ‘‘মাঠ থেকে গরু-ছাগলআনতে যাই। সব সময়ে পরিবারের পুরুষেরাসঙ্গে থাকেন না। খুব আতঙ্কে আছি।’’ রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর বলেন, ‘‘ঘৃণ্য ঘটনা। পুলিশকে বলেছি,দ্রুত দোষীদের খুঁজে বারকরতে। মৃতার পরিবারকে সব রকম ভাবে সাহায্য করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy