বিপজ্জনক: পোস্তা উড়ালপুলের কাঠামোর তলা দিয়ে চলছে যাতায়াত। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনে আগামী ১৫ জুন থেকে পোস্তার বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভাঙার কাজ শুরু হবে। এই কাজ চার দফায় হবে বলে বুধবার জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম।
২০১৬ সালের ৩১ মার্চ গণেশ টকিজ়ের কাছে নির্মীয়মাণ পোস্তা উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ে। মৃত্যু হয় ২৮ জনের। ভেঙে পড়া উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ ঠিক করতে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করেছিলেন। প্রথমে খড়্গপুর আইআইটি-র বিশেষজ্ঞেরা উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেন। কিন্তু সেই রিপোর্টে স্পষ্ট মতামত না থাকায় সেতু বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়নাকে দায়িত্ব দেয় সরকার। তিনি গত বছর উড়ালপুল ভেঙে ফেলার পরামর্শ দেন। ওই পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়েই সেটি ভাঙার কাজে নামছে সরকার। রেলের সংস্থা রাইটস-এর তত্ত্বাবধানে সেই কাজ হবে। উড়ালপুল ভাঙার সময়ে যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে ফিরহাদ জানান।
এ দিন কলকাতা পুর ভবনে একটি বৈঠকে পোস্তা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা ছাড়াও ছিলেন কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। পোস্তা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক সীতানাথ ঘোষ বলেন, ‘‘পোস্তায় জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন। সেই সময়ে ওঁকে অসম্পূর্ণ উড়ালপুলের ভয়াবহতার কথা জানিয়ে সেটি ভেঙে ফেলতে আর্জি জানিয়েছিলাম। প্রচুর মানুষ জীবন বাজি রেখে ওই উড়ালপুলের নীচ দিয়ে যাতায়াত করেন। আমাদের আর্জিকে গুরুত্ব দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ।’’
এ দিন সরকারি তরফে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করা হয় যে, উড়ালপুল ভাঙার সময়ে তাঁদের নিরাপত্তার দিকটি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। মূলত রাতের দিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ভাঙার কাজ হবে। ভেঙে ফেলা অংশ সরিয়েও ফেলা হবে দ্রুত। প্রথম দফায় ৪৫ দিন ধরে হাওড়া সেতুর মুখ থেকে পোস্তা মোড় পর্যন্ত অংশ ভাঙার কাজ চলবে। তার পরে ধাপে ধাপে গিরিশ পার্ক মোড় পর্যন্ত অংশ ভাঙা হবে।
পোস্তা উড়ালপুল তৈরির সময় থেকেই আপত্তি জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ২০১৬-র পরে সেটি ভেঙে ফেলতে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল ‘উড়ালপুল হটাও কমিটি’। ওই কমিটির সম্পাদক বাপি দাসের অভিযোগ, ‘‘উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পর থেকে আমরা আতঙ্কে দিন কাটাই। একাধিক বার উপর থেকে চাঙড় ভেঙে পড়েছে। অনেকেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। আমরা চাই, পুরো উড়ালপুল দ্রুত ভেঙে ফেলা হোক।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy