নিউ আলিপুরের এই পার্কে পুজো ঘিরেই গোলমাল, তাই রয়েছে পুলিশ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
পুজো শুরুর আগে খুঁটিপুজো করছিলেন ক্লাবের সদস্য-সহ পাড়ার লোকজন। ছিলেন এক মন্ত্রীও। কিন্তু দলবল নিয়ে এসে খুঁটিপুজো বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কাউন্সিলর ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে।
নিউ আলিপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজো প্রাঙ্গণ তথা নিউ আলিপুর চিলড্রেন্স পার্কে রবিবারের এই ঘটনা আপাতদৃষ্টিতে পুজো সংক্রান্ত বিবাদ। কিন্তু ঘটনার এক দিকে রয়েছেন রাসবিহারীর বিধায়ক তথা মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও অন্য দিকে কাউন্সিলর জুঁই বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী, শাসক দলের যুব নেতা স্বরূপ বিশ্বাস। যিনি আবার টালিগঞ্জের বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই। শোভনদেবের সঙ্গে স্বরূপদের বিবাদের বহু কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে এলাকায়। এ বার সেই বিবাদ এসে পড়ল খুঁটিপুজোতেও! ঘটনায় স্পষ্ট, তৃণমূল নেতৃত্বের বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও দক্ষিণ কলকাতার এক আদি নেতা ও এক অধুনা প্রভাবশালী নেতা-পরিবারের দ্বন্দ্ব কিছুতেই মিটছে না।
কমিটির অভিযোগ, ৬৬ বছরের এই পুজোর সব অনুমতি থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কাউন্সিলরের কথায় অন্যায় ভাবে খুঁটিপুজো বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও থানা সূত্রের খবর, গোলমালের খবর শুনে পুলিশ গিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। একই পার্কের ভিতরে অন্য পুজোর অনুমতিও তারা দেয়নি বলে পুলিশের বক্তব্য। তা হলে কীসের ভিত্তিতে মহিলারা বাধা দিলেন, সেই প্রশ্নও থাকছে।
পুজো কমিটি সূত্রের বক্তব্য, এ দিন সকালে খুঁটিপুজোয় আমন্ত্রিত হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেববাবু। অভিযোগ, খুঁটিপুজো শুরু হওয়ার একটু আগে এলাকার কাউন্সিলর জুঁই ও তাঁর স্বামী স্বরূপ পুলিশ এবং দলবল-সহ এসে তা বন্ধ করে দেন। অভিযোগ, ধাক্কা দেওয়া হয় বিদ্যুৎমন্ত্রীকেও। যদিও জুইঁয়ের পাল্টা বক্তব্য, ১৪ বছর ধরে চিলড্রেন্স পার্কে পুজো হলেও নিউ আলিপুরের বাসিন্দাদের পুজো কমিটিতে রাখা হয় না। তাই এলাকার মহিলারা নতুন কমিটি তৈরি করে সেখানে পুজো করবেন বলে ঠিক করেছেন। তাঁরা এ দিন পুজো করতে গেলে শোভনদেব খুঁটি তুলে ফেলে দেন। তাঁর অনুগামীরা মহিলাদের হেনস্থা করে বলেও অভিযোগ কাউন্সিলরের।
শোভনদেববাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘যাদের আমন্ত্রণে যাই, তাদের পুজোর খুঁটি পুঁতে চলে এসেছি। মহিলাদের হেনস্থা করার কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’ পুজো কমিটির আহ্বায়ক পুলক দাসের দাবি, ‘‘সুরুচি সঙ্ঘের পুজো হয় এলআইসি-র মাঠে। আদালতে সুরুচি সঙ্ঘ হেরে গিয়েছে। এখন থেকে আমাদের মাঠ দখল করে রাখতে চাইছে, যাতে পরের বছর সুরুচির পুজো চিলড্রেন্স পার্কে স্থানান্তরিত করা যায়!’’ এলাকায় প্রশ্ন, রাজনীতির হাত ধরেই কি পুজোর দখলদারির খুঁটি পোঁতা হল?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy