Advertisement
১৬ মে ২০২৪

আধার সংযুক্তির নাম করে কার্ডের তথ্য জেনে টাকা সাফ

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম প্রেমরঞ্জন ধঞ্জু ওরফে ডন সাহেব। শনিবার নালন্দা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন সার্ভে পার্ক থানার দুই তদন্তকারী অফিসার তুমনাথ তিওয়ারি এবং উমতোষ মোহতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩০
Share: Save:

হাতে এক জনের ছবি নিয়ে একটি শপিং মলের কর্মীদের দেখাচ্ছেন দুই ব্যক্তি। জানতে চাইছেন, ছবিতে থাকা যুবককে তাঁরা চেনেন কি না। দু’জনের কথা শুনে এগিয়ে এলেন অল্পবয়সি এক যুবক। তিনিই জানালেন, ছবিতে থাকা লোকটি প্রায়ই ওই শপিং মলে আসেন। কিছু দিন আগেও অনেক টাকার জিনিস কিনেছেন। অল্পবয়সি ওই যুবকের কথার সূত্র ধরেই একটি প্রতারণা-চক্রের হদিস পেল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ভিন্‌ রাজ্যের ওই চক্রের এক পাণ্ডাকে। জানা গিয়েছে, ফোন করে ডেবিট কার্ডের নম্বর ও পিন জেনে চলত এই প্রতারণা।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম প্রেমরঞ্জন ধঞ্জু ওরফে ডন সাহেব। শনিবার নালন্দা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন সার্ভে পার্ক থানার দুই তদন্তকারী অফিসার তুমনাথ তিওয়ারি এবং উমতোষ মোহতা। ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় এনে সোমবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতের গাড়িতে করেই কেনাকাটা করত চক্রের সদস্যেরা। বাজেয়াপ্ত হয়েছে টিভি, মোবাইল সহ বিভিন্ন জিনিস।

জানুয়ারি মাসে কলকাতা পুরসভার চিফ ইঞ্জিনিয়ার উৎপলকুমার চৌধুরী সার্ভে পার্ক থানায় অভিযোগে জানান, তিনি আধার কার্ডের সঙ্গে একটি অনলাইন ওয়ালেটের সংযোগ করার চেষ্টা করছিলেন। এ জন্য তিনি ইন্টারনেট থেকে পাওয়া একটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন। উৎপলবাবুর বক্তব্য, বিজয় কুমার নামে এক ব্যক্তি হিন্দি-বাংলা মেশানো কথায় তাঁকে জানান, তিনি আধার কার্ডের সঙ্গে ওই অনলাইন ওয়ালেটের সংযোগ করিয়ে দেবেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বিজয়ের কথায় আশ্বস্ত হন অভিযোগকারী। এর পরেই ওই যুবক কথার কায়দায় উৎপলবাবুর ডেবিট কার্ডের নম্বর ও পিন জেনে নেয়। পরে তিনি জানতে পারেন, অনলাইন শপিংয়ের জন্য দু’দফায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, প্রথম ফোন নম্বর ধরে তদন্ত শুরু হলেও দেখা যায় ফোনের সঙ্গে যুক্ত ঠিকানাটি ভুয়ো। পরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, নালন্দার একটি শপিং মল থেকে কেনাকাটা করেছে প্রতারকেরা।
সেই মতো ওই শপিং মলের সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে শুরু হয় দুষ্কৃতীদের খোঁজ।

এক অফিসার জানান, প্রথমে শপিং মলের কেউ ডনকে চিনতে পারছিলেন না। শেষে এক বাঙালি যুবক তাকে চিনতে পেরে পুলিশকে জানান। অভিযুক্তের গাড়ির নম্বর ধরে খোঁজ করতে গিয়ে দেখা যায়, দুষ্কৃতীরা জিনিস কিনে প্রথমে একটি ভাড়া গাড়ি নিয়ে জাতীয় সড়কের ওয়ে ব্রিজে যেত। সেখানে গাড়ি পাল্টে ডনের গাড়িতে চেপে পালাত।

পুলিশের দাবি, ধৃত ডন জেরায় জানিয়েছে, এই চক্রে আরও পাঁচ জন রয়েছে। একটি ওয়েবসাইটে তাদের ফোন নম্বর দেওয়া থাকত সাহায্যের নাম করে। কেউ তাতে যোগাযোগ করলে নালন্দার নিশ্চলগঞ্জ এলাকায় ডনের দুই সঙ্গী দীপক এবং অমিত তাঁর ডেবিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নিত। পরে তা দিয়ে অনলাইন ওয়ালেটের মাধ্যমে কেনাকাটা করত ডন ও এই চক্রের আরও দুই সদস্য ছোটু ও রাজু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Survey Park forgery arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE