প্রাক বর্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক হচ্ছে বছরের গোড়া থেকেই। রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে। অথচ পামারবাজারে ফেব্রুয়ারি মাসে খারাপ হওয়া জল বার করার তিনটি পাম্প জুনেও সারানো হয়নি। যার খেসারত দিতে হল উত্তর কলকাতার বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দাকে। রবিবার বৃষ্টির জেরে ওই সব এলাকায় জমা জল নামতে প্রায় তিন-চার ঘণ্টা সময় লেগেছে।
পুরভোটের আগে এ ঘটনায় অস্বস্তিতে ওই এলাকার তৃণমূলের কাউন্সিলরেরাও। নিকাশি দফতরের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন তাঁরা। ওই দফতরের দায়িত্ব আবার খোদ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হাতেই। তিনিও ওই ঘটনায় বিরক্ত। সোমবার তিনি জানান, আপাতত বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশনের একটি (স্ট্যান্ডবাই) পাম্প পামারবাজারে লাগানো হচ্ছে। অন্য দু’টি যাতে এক মাসের মধ্যে সারানো যায়, তার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
পুর সূত্রের খবর, উত্তর ও মধ্য কলকাতার জমা জল মূলত বার হয় পামারবাজার পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে। ওই এলাকার নিকাশির পরিকাঠামো উন্নয়নে অধিকাংশ স্থানেই মাটির নীচে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো হয়েছে গ্লাস রিইনফোর্সমেন্ট প্লাস্টিক (জিআরপি) পাইপ। এর উপরে নিকাশির জল টানার জন্য বহু টাকা খরচ করে ওই পাম্পিং স্টেশনে চারটি বিদেশি পাম্প বসানো হয়েছে। এক পুর-ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, “ওই চারটি পাম্প চালু থাকলে উত্তর ও মধ্য কলকাতায় খুব কম সময়ের মধ্যে জল বার করা সম্ভব।”
সম্প্রতি মেয়র পারিষদেরা জানতে পারেন, পামারবাজারে ৪টির মধ্যে ৩টি পাম্পই খারাপ। গত মেয়র পরিষদের বৈঠকে প্রাক বর্ষার প্রস্তুতির খবর নিতে গিয়ে বিষয়টি ধরা পড়ে। সেখানেই তলব করা হয় ওই দফতরের স্পেশাল অফিসারকে। জানতে চাওয়া হয়, কবে থেকে পাম্প খারাপ। অফিসার জানান, ফেব্রুয়ারি থেকেই। এর পরেই একাধিক সদস্য তাঁকে ধমক দিয়ে বলেন, “এত দিন সারানো হয়নি কেন? আপনি কি ঘুমোচ্ছিলেন?” মেয়রের সামনে ঘটনাটি ঘটে। মেয়রও বলেন, আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। মেয়র পারিষদেরা ওই অফিসারের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন।
আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কোনও কাজ করতে হলে পুর-নিয়মে দরপত্র ডাকায় কিছু ছাড় মেলে। তাতে কাউকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকে। পুরসভার অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, সেই জন্যই কি এখানে সময়ে পাম্প সারানো হয়নি? এক পুর-ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, “ওই পাম্পগুলির এক-একটির দাম আড়াই কোটিরও বেশি। আসলে পাম্প সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে মেরামতির চুক্তি থাকলে এই সমস্যা হতো না।” এখানে তা করা হয়নি বলেই ভুগতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy