Advertisement
০৭ মে ২০২৪

মেয়রের ওয়ার্ডে পার্কে বৃক্ষনিধন, ক্ষোভ এলাকায়

উন্নয়নের নামে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় সবুজ ধ্বংস করা হচ্ছে বলে বার বারই অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। এ বার কমিউনিটি হল তৈরির জন্য মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডের ‘হাতি পার্ক’-এর বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রবিবার পুরসভার কর্মীরা ওই পার্কের ৬-৭টি বড় গাছ কাটতে শুরু করেন। অভিযোগ, এলাকার বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করলেও, গাছ কাটা বন্ধ করেননি পুরকর্মীরা।

কমিউনিটি হল তৈরির নামে এ ভাবেই কাটা পড়েছে গাছ। রবিবার, পর্ণশ্রীর হাতি পার্কে। ছবি: অরুণ লোধ

কমিউনিটি হল তৈরির নামে এ ভাবেই কাটা পড়েছে গাছ। রবিবার, পর্ণশ্রীর হাতি পার্কে। ছবি: অরুণ লোধ

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০৩:০৩
Share: Save:

উন্নয়নের নামে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় সবুজ ধ্বংস করা হচ্ছে বলে বার বারই অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। এ বার কমিউনিটি হল তৈরির জন্য মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডের ‘হাতি পার্ক’-এর বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রবিবার পুরসভার কর্মীরা ওই পার্কের ৬-৭টি বড় গাছ কাটতে শুরু করেন। অভিযোগ, এলাকার বাসিন্দারা এর প্রতিবাদ করলেও, গাছ কাটা বন্ধ করেননি পুরকর্মীরা।

বেহালার পর্ণশ্রীর ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় সাত কাঠা জমির উপরে পুরসভার ওই পার্কটি এলাকার মানুষের কাছে ‘হাতি পার্ক’ নামে পরিচিত। পার্কটির ভিতরে ছোট ছোট গাছপালার পাশাপাশি ১২-১৪টি বড় গাছ ছিল। বাচ্চাদের খেলার জায়গা রয়েছে। মাঝখানে অনেকটা ফাঁকা জায়গা। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখানে বাচ্চারা ফুটবল খেলে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে পার্কটির রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। ফলে পার্কটি আগাছায় ভরে গিয়েছে।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বড় গাছ কাটার যন্ত্র দিয়ে বেশ কয়েক জন গাছ কাটতে শুরু করে দেন। প্রতিবাদ জানান এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা শুভব্রত নন্দী বলেন, “আমরা প্রতিবাদ করলে, তাঁরা নিজেদের পুরকর্মী বলে পরিচয় দেন। পুরসভার নির্দেশেই তাঁরা গাছ কাটছেন বলে আমাদের জানান।”

এলাকার প্রায় ৫০ বছরের উপরের বাসিন্দা মধুগীতি মিত্র বলেন, “এলাকায় একের পর এক বড় আবাসন গড়ে উঠছে। ফলে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। একমাত্র পার্কটির ভিতরেই বেশ কিছু গাছ ছিল। বছরের বিভিন্ন সময়ে এই গাছগুলিতে পাখি বাসা বেঁধে বসবাসও করত। কিন্তু গাছগুলি কেটে ফেলার ফলে আশপাশে সবুজও রইল না। পাখিও কমে যাবে।” আর এক বাসিন্দা সুপর্ণা মিত্র বলেন, “পর্ণশ্রী লেক ছাড়া আশপাশে কোনও পার্ক নেই। পুরসভা পরিষ্কার করে এটাকেই সাজিয়ে দিলে আমাদের স্থানীয় বাচ্চাদের খেলার জায়গাটা থাকত।” উল্টে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, জনবসতির মধ্যে কমিউনিটি হলের কোনও প্রয়োজনই ছিল না। কারণ সব আবাসেনরই নিজস্ব কমিউনিটি হল রয়েছে। বরং পার্কটিকে পরিষ্কার করে পুরসভা যদি আরও ভাল করে সাজাত তা হলে উপকার হত।

কিন্তু গাছ কাটা হচ্ছে কেন? পুরসভা বা কাউন্সিলরই বা কী বলছেন? এলাকার কাউন্সিলর তথা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বাসিন্দাদের অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কেউই পার্কটা ব্যবহার করেন না। ওই পার্কটি জঙ্গলে ভর্তি। বর্ষাতেও জল জমে যায়। তিনি বলেন, “এলাকার মানুষের স্বার্থে কমিউনিটি হল তৈরি হবে। যে সব গাছ কাটা হয়েছে, তার বদলে পরিপূরক গাছ লাগিয়ে দেওয়া হবে। কিছু গাছ কাটা হয়নি, ছাঁটা হয়েছে।” কিন্তু সাধারণ বাসিন্দারা মেয়রের কথায় সন্তুষ্ট নন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hati park parnashri community hall diksha bhuniya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE