Advertisement
১৭ মে ২০২৪

‘কাঠি’ বিতর্কে সিপিএম, নড়ে বসল প্লেনাম-মঞ্চ

বরাবরের অভ্যাস, ভারী ভারী শব্দে জগৎ কাঁপিয়ে তোলা! চার পাশে যা ঘটছে, তাকে এমন ভাষায় বিবৃত করা যে, সাধারণ মানুষ থেকে সাধারণ পার্টিকর্মীও ঘাবড়ে যান! জনতার সঙ্গে হারানো সংযোগ ফিরে পেতে এই গাম্ভীর্য ঝেড়ে ফেলার কথা ইদানীং বলছে সিপিএম। খাতায়-কলমের সেই ইচ্ছাকেই এ বার হাতে-কলমে প্রয়োগ করে দেখালেন তরুণ এক ছাত্র নেতা।

সাংবাদিক বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি। শনিবার আলিমুদ্দিনে। — নিজস্ব চিত্র

সাংবাদিক বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি। শনিবার আলিমুদ্দিনে। — নিজস্ব চিত্র

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১৬
Share: Save:

বরাবরের অভ্যাস, ভারী ভারী শব্দে জগৎ কাঁপিয়ে তোলা! চার পাশে যা ঘটছে, তাকে এমন ভাষায় বিবৃত করা যে, সাধারণ মানুষ থেকে সাধারণ পার্টিকর্মীও ঘাবড়ে যান! জনতার সঙ্গে হারানো সংযোগ ফিরে পেতে এই গাম্ভীর্য ঝেড়ে ফেলার কথা ইদানীং বলছে সিপিএম। খাতায়-কলমের সেই ইচ্ছাকেই এ বার হাতে-কলমে প্রয়োগ করে দেখালেন তরুণ এক ছাত্র নেতা।

কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে প্লেনামের মঞ্চ জুড়ে বসে সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট, মানিক সরকার, এম এ বেবি, সূর্যকান্ত মিশ্র, হান্নান মোল্লা থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পো়ডিয়ামে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস। উত্তর ২৪ পরগনার ডাকাবুকো জেলা সম্পাদক গৌতম দেবের প্রিয়পাত্র এই ছাত্র নেতা আগেও দু-এক বার বড় মঞ্চ পেয়ে দলের নেতাদের তাক লাগিয়ে ছেড়েছেন। এ বারও তাই বাড়তি নজর ছিল তাঁর দিকে। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে দলের একাংশের বিরূপ মনোভাবকে এক হাত নিতে নিতেই শনিবার দেবজ্যোতি বলে দিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কী ভাবে লড়া যাবে, সেটা নিয়ে ভাবার জন্য থাকে দিনে বড় জোর সাত মিনিট! সিপিএমেই কেউ ভাল কিছু কাজ করলে তাকে কাঠি দিতে বাকি সময়টা চলে যায়!

সিপিএমের বিতর্কে ‘কাঠি’! নড়েচড়েই বসতে হয়েছে পক্ককেশ নেতাদের। ছোট্ট কিন্তু মোক্ষম শব্দবাণে নিশানা ভেদ করে ছেড়েছেন দেবজ্যোতি। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমরা সাধারণত অন্তর্দলীয় সমস্যা, উপদলীয় কোন্দল জাতীয় শব্দ শুনতে অভ্যস্ত। সেখানে কাঠি একটু অন্য রকম লেগেছে বৈকি!’’ লেগেছে বলেই দিনের শেষে প্রতিনিধিদের মাথায় কাঠির অনুরণনটা রয়ে গিয়েছে।

তরুণ নেতার মূল্যায়ন শুনে হেসেছেন সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরিও। আর রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু জোর দিয়েছেন নেতাদের সঙ্গে মাটির যোগাযোগ আরও বাড়ানোর দিকে। সেই জন্যই জোনাল ও লোকাল কমিটির চেনা চেহারা বদলে দিয়ে এ বার গড়ে তোলা হবে ‘এরিয়া কমিটি’। জেলায় জেলায় তার রূপরেখা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী বছর জুলাই মাসের মধ্যে। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘আমরা চাইছি, জেলার নেতারা সরাসরি নীচের দিকে পৌঁছে যান। সরাসরি শাখা স্তরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকুক। মানুষের সঙ্গে নিরন্তর সংযোগ হোক।’’ সেই জন্যই আন্দোলন কর্মসূচিকেও যথাসম্ভব সাধারণ মানুষের জীবনের কাছাকাছি করে তোলার কথাও ফের বলতে হয়েছে।

আনুষ্ঠানিক ভাবে প্লেনাম যে লক্ষ্য হাতে নিচ্ছে, ‘কাঠি’র ঠেলায় তাতে অবশ্য আগেই পৌঁছে গিয়েছেন ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

plenum left front
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE