কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালীন পড়াশোনার ব্যঘাত রুখতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকায় মিটিং-মিছিল বন্ধ করেছে রাজ্য সরকার। একই পথে হেঁটে তমলুক শহরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল সংলগ্ন হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের মোড় এলাকায় রাজনৈতিক দলের মিটিং-মিছিলের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। রোগীদের যাতে অসুবিধা না হয় সে জন্য এই এলাকাকে ‘সাইলেন্স জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু সে সব কিছুকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্বকর্মা ও দুর্গাপুজোয় মাইক বেজেছে কান ফাটানো শব্দে। লক্ষ্মীপুজোর আগেও মণ্ডপে মণ্ডপে বেজেছে নিষিদ্ধ ডিজে বক্স। মাইক ও সাউন্ড বক্সের তাণ্ডবে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। তাঁদের আশঙ্কা কালীপুজোয় শব্দের তাণ্ডব আরও বাড়বে শহর জুড়ে। এই পরিস্থিতিতে শব্দ দৈত্যের হাত থেকে রেহাই পেতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছে তমলুকের একটি
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
জেলা সদর তমলুক শহরে কালীপুজো ঘিরে জাঁকজমক থাকে প্রতিবছরই। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দেড়শোটি কালীপুজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে। মণ্ডপগুলিতে সাউন্ডবক্স ও মাইকের শব্দ দূষণ রুখতে পুলিশ-প্রশাসনকে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। ১২ অক্টোবর সংগঠনের সম্পাদক শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা-সহ জেলার বিশিষ্টরা তমলুক শহর ও জেলার সর্বত্র শব্দ দূষণ বন্ধের উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের কাছেও এ বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
গৌরাঙ্গবাবু বলেন, ‘‘জেলার প্রায় সর্বত্র বিভিন্ন পুজোর নামে সারা রাতভর মাইক, ডিজের প্রবল শব্দের তাণ্ডব চলছে। সমস্যা হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দা বিশেষত অসুস্থ ও বয়স্কদের।’’ তাঁর দাবি, সংগঠনের তরফে তাঁরা তমলুক শহর-সহ বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা মূলক প্রচার চালিয়েছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। গৌরাঙ্গবাবু বলেন, ‘‘মাইক ও ডিজের তাণ্ডব বন্ধে কাঁথি, খেজুরি ও রামনগর থানায় পুলিশ–প্রশাসন উদ্যোগী হলেও জেলা সদর তমলুক শহর ও সংলগ্ন এলাকায় প্রশাসনের হুঁশ নেই।’’
এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে চলার জন্য পুজো উদ্যোক্তাদের নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। অমান্য করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশের তরফে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ খারিজ করে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘উদ্যোক্তাদের আগাম সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও কোনও এলাকা থেকে অভিযোগ এলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy