Advertisement
০৮ মে ২০২৪
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়

মুকুল অনুগামীদের ছাঁটতে টিএমসিপি নেতৃত্বে রদবদল

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় রদবদল হল। সোমবারই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র এই রদবদল করেছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। আগে টিএমসিপি-র বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন প্রবীর আদক। নতুন সভাপতি হয়েছেন আকাশদীপ ভৌমিক। টিএমসিপির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার চেয়ারম্যান ছিলেন বিশ্বনাথ দাস। বিশ্বনাথকেও এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি অবশ্য টিএমসিপির জেলা সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৪
Share: Save:

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় রদবদল হল। সোমবারই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র এই রদবদল করেছেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। আগে টিএমসিপি-র বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন প্রবীর আদক। নতুন সভাপতি হয়েছেন আকাশদীপ ভৌমিক। টিএমসিপির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার চেয়ারম্যান ছিলেন বিশ্বনাথ দাস। বিশ্বনাথকেও এই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি অবশ্য টিএমসিপির জেলা সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন।

তৃণমূল সূত্রের খবর, মুকুল অনুগামীদের ছেঁটে এই রদবদলের লক্ষ্য। যাঁদের সরিয়ে দেওয়া হল, সেই বিশ্বনাথ, প্রবীর প্রমুখ মুকুল-শিবিরের লোক বলেই পরিচিত। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরিও পরিচিত মুকুল অনুগামী হিসেবে। পদ হারানো প্রবীর আবার রমাপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তবে মুকুল সংস্পর্শ এড়াতে ঘনিষ্ঠ-মহলে রমাপ্রসাদ বলছেন, “আমরা কারও অনুগামী নই। দিদিই (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আমাদের আদর্শ-প্রেরণা।” আর এই রদবদল প্রসঙ্গে রমাপ্রসাদের বক্তব্য, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখায় পরিবর্তন হয়েছে বলে শুনছি। তবে এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। না জেনে কিছু বলতেও পারব না!”

নতুন সভাপতি আকাশদীপ বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। স্বদেশ জানান, সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রই এই রদবদল করেছেন। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র অবশ্য বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আকাশদীপের নাম পাঠানো হয়। আমরা সেই নাম অনুমোদন করেছি।”

এমন রদবদলের সিদ্ধান্তে যে তাঁরা ক্ষুব্ধ তা স্পষ্ট টিএমসিপির বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সদ্য প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্বনাথের বক্তব্যে। তাঁর কথায়, “শুনছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটে পরিবর্তন হয়েছে বলে। তবে জেলা বা রাজ্য নেতৃত্ব কেউই তো কিছু জানালেন না!” এ বার কী করবেন? বিশ্বনাথ বলছেন, “কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করব। কিছু একটা করতেই হবে!” দলের ছাত্র সংগঠনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এ ভাবে বারবার প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও। সমস্যার সমাধানে কী করণীয়, তা ভেবে উঠতে পারছেন না তাঁরাও! দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ অবশ্য বলছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিটে পরিবর্তন হয়েছে বলে শুনছি। এটা ছাত্রদের ব্যাপার। আমি কী মন্তব্য করব!”

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অবশ্য নতুন নয়। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব বহু চেষ্টা করেও এই দ্বন্দ্ব মেটাতে পারেননি। তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বও যুযুধান দু’পক্ষকে এক টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছেন। আলোচনার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তা-ও ফলপ্রসূ হয়নি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচনে টিএমসিপির ফল তুলনায় খারাপ হয়েছে বলেও মনে করেন অনেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৪টি আসনের মধ্যে এ বার মাত্র ২৯টি আসনে লড়াই হয়। বাকি আসনগুলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছিল টিএমসিপি। যে ২৯টি আসনে লড়াই হয় তারমধ্যে ১৫টি আসনে প্রার্থী ছিল এসএফআইয়ের। তারা ১২টি জেতে। ১০টি আসনে প্রার্থী ছিল ডিএসও’র। তারা ৬টি জেতে। বাকি ১১টি আসনে জয়ী হয় টিএমসিপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE