Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Crime

নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সাত বছর জেলবন্দি, আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস

২০১৫ সালের ৬ নভেম্বর, নবগ্রাম থানার পুন্ডি গ্রামের ধুলাগুড়ি জঙ্গলে খুন হয় ৯ বছরের এক নাবালিকা। ৭ নভেম্বর, নাবালিকার মামা সুজাউদ্দিন শেখ নবগ্রাম থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।

এক নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় ২ যুবক ৭ বছর ধরে জেলে বন্দি ছিলেন।

এক নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় ২ যুবক ৭ বছর ধরে জেলে বন্দি ছিলেন। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবগ্রাম শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ০২:৪৪
Share: Save:

এক নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় ২ যুবক ৭ বছর ধরে জেলে বন্দি ছিলেন। বুধবার বিচারকের রায়ে তাঁরা দু’জনেই বেকসুর খালাস পেলেন। জামির শেখ ও আলকাস শেখ নামে ওই দুই অভিযুক্তকে আদালত নির্দোষ বলে সাব্যস্ত করে বিনা শর্তে মুক্তি দিয়েছে। মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার পুন্ডিতে ওই দু’জনের বাড়ি।

২০১৫ সালের ৬ নভেম্বর, নবগ্রাম থানার পুন্ডি গ্রামের ধুলাগুড়ি জঙ্গলে খুন হয় ৯ বছরের এক নাবালিকা। ৭ নভেম্বর, নাবালিকার মামা সুজাউদ্দিন শেখ নবগ্রাম থানায় লিখিত ভাবে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ঘটনার দিন তাঁর ভাগ্নি আরও ২ নাবালিকার সঙ্গে স্থানীয় একটি জঙ্গলে ছাগল চরাচ্ছিল। সেই সময় ওই এলাকারই যুবক জামির তাঁর ভাগ্নিকে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যায়। তার পর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। নাবালিকার মামা পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন, জামির ও আলকাস তাঁর ভাগ্নিকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ এবং খুন করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন), ৩৭৬ (পকসো), এবং ৩৪-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার পরের দি‌ন স্থানীয় আদিবাসীরা ধুলাউড়ি জঙ্গলে শিকার করতে গিয়ে ওই নাবালিকার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার পরে, নাবালিকার দেহ উদ্ধার করে নবগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে খুনের কথা উল্লেখ করা হয়।

অভিযুক্ত জামিরকে শুরুতেই গ্রেফতার করা হয়। তার তিন দিন পর, ১২ নভেম্বর, ২০১৫ দ্বিতীয় অভিযুক্ত আলকাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই থেকে ধৃতদের একাধিক বার জামিনের আবেদন খারিজ করে‌ন বিচারক। দু’জনকেই জেল হেফাজতে রেখে ২০১৭ সালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বুধবার মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক দীপ্ত ঘোষ অভিযুক্ত দু’জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন। ৭ বছর জেলবন্দি থাকার পর আদালতের রায়ে মুক্ত হলেন ওই দুজন।

জামিরের আইনজীবী বুধবার বলেন, “আমি প্রথম থেকে যে দাবি জানিয়েছিলাম, তাকে মান্যতা দিয়ে মাননীয় বিচারক আমার মক্কেলকে মুক্তি দিয়েছেন।’’

আলকাস বলেছেন, “এ ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে পুলিশের আরও ভাল ভাবে তদন্ত করা উচিত ছিল। আমাদের মতো বিনা দোষে আর যেন কাউকে সাজা পেতে না হয়। যে ভাবে সামাজিক সম্মান নষ্ট হয়েছে, তা কোনও দিনই ফিরে পাব না আমরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE