বহু আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেও গোঁজের খোঁচা এড়াতে পারছে না তৃণমূল। সে নদিয়া শান্তিপুর-কৃষ্ণগঞ্জ হোক বা মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি।
নদিয়ার রানাঘাট ২ ব্লক বা চাকদহে তৃণমূলের প্রচুর গোঁজপ্রার্থী রয়েছেন। যাঁদের নানা ভাবে বুঝিয়ে, ভয় দেখিয়েও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানো যায়নি। সিপিএম, বিজেপির পাশাপাশি ‘নির্দল প্রার্থী’ হিসেবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মী। একাধিক গোঁজও আছেন কোথাও-কোথাও।
মুর্শিদাবাদে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে প্রায় ৬৩ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে শাসকদল। কিন্তু জেলায় শতাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত আসন এবং পঞ্চায়েত সমিতির অন্তত দশটি আসনে তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থী থেকে গিয়েছে। যেমন জলঙ্গি ব্লকে ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন এবং তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে নির্দল প্রার্থী রয়েছেন, যারা আদতে তৃণমূলের লোক বলেই পরিচিত।
অন্য ব্লকগুলিতেও কমবেশি গোঁজ প্রার্থী রয়েছে। মুর্সিদাবাদ জেলা পরিষদের ২২টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে। সব ক’টিতেই তৃণমূলের প্রার্থী আছে। বিজেপির আছে ১১ জন, বামফ্রন্টের ১৮ জন, কংগ্রেসের ১৭ জন। সেই সঙ্গে চার জন নির্দল প্রার্থী রয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির যে ২৬৪টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে, তাতে ৫৬ জন নির্দল লড়ছেন। পঞ্চায়েতে ১৪৯৩ আসনে ভোটে লড়ছেন ৭৮৪ জন নির্দল প্রার্থী।
এই সব নির্দলই তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থী এমনটা নয়। কিন্তু ভিড়ে মিশে আছেন বেশ কিছু মুখ যাঁরা নিজের নাক কেটে শাসকের যাত্রাভঙ্গ করতে পারেন। দুই জেলাতেই তৃণমূল যদিও দাবি করছে, তাদের কোনও কোন্দল নেই, গোঁজ প্রার্থীও নেই।
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলছেন, “তৃণমূলের কেউ নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়াননি। অতিরিক্ত প্রার্থী হিসেবে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তাঁরা অধিকাংশই প্রত্যাহার করেছেন। যাঁরা করেননি, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।”
আর নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের দাবি, “কোথাও হয়তো যোগাযোগের অভাবে শেষ কেউ-কেউ থেকে গিয়েছেন। তাঁরা লিফলেট বিলি করে নিজেদের ভোট থেকে সরিয়ে নেবেন।”
মুখে যা-ই বলুন, নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণীকুমার রায়ের স্ত্রী রীণা রায়ের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়া নেতা তপন দাসকে এখনও লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরাতে পারেননি তৃণমূলের নেতারা। আর এখন বিরোধীরা এই কোন্দল থেকে ফায়দা তুলতে চাইছে।
বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, “যেখানে আমাদের দলের প্রার্থী নেই, সেখানে নির্দল থাকলে তৃণমূলকে হারাতে আমরা তাঁকেই সমর্থন দেব।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য আবার বলেন, “যেখানে আমাদের প্রার্থী নেই, সেখানে যারা তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে পারবে আমাদের লোকজন তাঁদের ভোট দেবেন।” যদিও বহু জায়গাতেই বিজেপির সঙ্গে নিচুতলায় তাঁদের সমঝোতা হচ্ছে বলে খবর। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “তৃণমূলকে হারাতে কাকে সমর্থন করা হবে তা ঠিক করার ভার স্থানীয় নেতৃত্বকে দেওয়া হয়েছে।”
গোঁজের পচা শামুকে শাসকের পা একটু-আধটু ছড়তে পারে বইকী!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy