যাদবপুরে মৃত পড়ুয়ার নামে হতে চলেছে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নামকরণ। — নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হওয়া পড়ুয়ার মা, বাবা সোমবার গিয়ে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সেখানে মমতা তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নাম হবে মৃত পড়ুয়ার নামে। তার অব্যবহিত পরেই নদিয়ার বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নামবদলের সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে সেই বিজ্ঞপ্তি পৌঁছয় নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। আশা করা হচ্ছে, দু’এক দিনের মধ্যেই নতুন নাম পাবে হাসপাতালটি। দাদার নামাঙ্কিত হাসপাতালে চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করুক ছোট ছেলে, এখন এটাই ‘স্বপ্ন’ যাদবপুরের মৃত পড়ুয়ার মায়ের।
গবেষক হবে বড় ছেলে, গবেষণা শেষ করে গ্রামের কলেজেই অধ্যাপনা করবে। ছেলেকে দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাদবপুরে ভর্তি করিয়ে এমন স্বপ্নই দেখেছিলেন মা। কয়েক দিনের মধ্যে মিলিয়ে গিয়েছে ‘স্বপ্ন’। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হস্টেলে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ছেলের। তার পর সংসারের উপর দিয়ে বহু ঝড় বয়ে গিয়েছে। গত সোমবার তাঁরা নবান্নে গিয়ে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নাম বদলে মৃত পড়ুয়ার স্মৃতিতে উৎসর্গ করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে নামবদলের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। মঙ্গলবার সকালে সেই চিঠি এসে পৌঁছোয় নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। দু’এক দিনের মধ্যেই মৃত ছাত্রের নামে পরিচিত হবে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতাল। দাদার নামাঙ্কিত হাসপাতালে ছোট ভাই চিকিৎসক হিসেবে সাধারণ মানুষের সেবা করুক, এখন এই স্বপ্নই বুকে পালন করছেন মৃত পড়ুয়ার মা। মৃত পড়ুয়ার মা বলেন, ‘‘আমাদের প্রিয় মমতা দিদি আমার বড় ছেলেকে চির অমর করে দিলেন। আমি চাই, আমার ছোট ছেলে দিদির আশীর্বাদে ওই হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করার সুযোগ পাক।’’ মৃত পড়ুয়ার বাবা বলেন, ‘‘বড় ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না। দিদির আশীর্বাদে ছোট ছেলে চিকিৎসক হয়ে যদি দাদার নামাঙ্কিত হাসপাতালে গরিব মানুষের চিকিৎসা করে, তা হলে শান্তি পাব। এ ছাড়া আমাদের তো আর কিছু নিয়েই স্বপ্ন দেখার নেই।’’ মৃত পড়ুয়ার পদার্থবিদ্যার শিক্ষকও মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না। তিনি বলছেন, ‘‘যত দিন এই হাসপাতাল থাকবে, তত দিন আমাদের মাঝে ও বেঁচে থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy