প্রতীকী ছবি।
একের পর এক গ্যারাজ থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে গাড়ি। যত ক্ষণে চুরি নজরে আসছে, তত ক্ষণে ওই গাড়ি রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে পাড়ি দিচ্ছে বিহার ও ঝাড়খণ্ডে। জাতীয় সড়ক ধরে চলা এমন অপরাধ-চক্রেরই হদিস মিলেছে নদিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। ইতিমধ্যেই জেলার বেশ কয়েকটি থানায় এলাকায় গাড়ি চুরির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্তে নেমে গাড়ির চুরির সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের যোগসূত্র পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ঝাড়খণ্ড গ্যাং সক্রিয় হয়েছে নদিয়ায়। ইতিমধ্যেই ধুবুলিয়া পুলিশের জালে ওই গ্যাংয়ের এক সদস্যও ধরা পড়েছেন। ধৃতের নাম আখতার শেখ। বাড়ি মালদহের গাজোলে। বুধবার তাঁকে কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। গ্যাংয়ের বাকি সদস্যের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার গভীর রাতে ধুবুলিয়া থানার টিবি হাসপাতাল এলাকা থেকে এক ব্যক্তির পিকআপ ভ্যান চুরি যায়। অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্তে নামে পুলিশ। চুরি যাওয়া গাড়ি কোন রাস্তা দিয়ে গিয়েছে, তা অনুমান করে ওই রুটের সব থানাকে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়। গাড়ির রং, নম্বরের তথ্য বিভিন্ন থানায় দেওয়া হয়। কিছু ক্ষণ পরেই মুর্শিদাবাদের সূতি থানা এলাকা থেকে ওই গাড়ি আটক হওয়ার খবর আসে। তৎক্ষণাৎ মুর্শিদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেয় ধুবুলিয়া থানার পুলিশ। আখতারকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার রাতেই থানায় নিয়ে আসা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ধৃতের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের যোগসূত্রের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে দাবি, ঝাড়খণ্ডেই চোরাই গাড়ি বিক্রি করেন আখতার। মালদহ জেলার কালিয়াচক দিয়েই ঝাড়খণ্ডে গাড়ি পাচার করা হত। তাঁকে জেরা করে আরও বেশ কয়েক জনের নামও জানা গিয়েছে বলে দাবি ওই সূত্রের।
কালিয়াচক ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এলাকা। তদন্তকারীদের মনে করছেন, সেখান দিয়ে গাড়ি পাচার করা সহজ। জাতীয় সড়ককেই সেফ রুট হিসাবে ব্যবহার করেছেন পাচারকারীরা। জাতীয় সড়কের একদম লাগোয়া এলাকা থেকেই তাঁরা মূলত গাড়ি চুরি করতেন। যাতে চুরির পর পালাতে সুবিধা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত জেরায় স্বীকার করেছেন, নদিয়ার অধিকাংশ গাড়ি চুরি হয় তাঁর হাত ধরে। কল্যাণী থেকে করিমপুর, এমনকি জেলার বাইরেও তাঁরা গাড়ি চুরির কাজ করেন। গত কয়েক দিনে কল্যাণী, কৃষ্ণনগর-কোতোয়ালি থানা থেকে একই পদ্ধতিতে গাড়ি চুরি গিয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, প্রথমে গ্যাংয়ের কয়েক জন সদস্য রেইকি করে যেতেন। তার পর গভীর রাতে আখতার এসে বিশেষ পদ্ধতিতে গাড়ির লক খুলে সেই গাড়ি নিয়ে জাতীয় সড়ক ধরে চম্পট দিতেন। শুধু পিকআপ ভ্যান নয়, চারচাকা গাড়ি থেকে শুরু করে ১০ চাকার লরিও তাঁরা চুরি করতেন।
কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ (গ্রামীণ)-এর অতিরিক্ত সুপার কৃশানু রায় বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই এই অপরাধ-চক্রের গতিবিধির উপর আমাদের নজর ছিল। আগেও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে তিন জন গ্রেফতার হয়েছেন এখনও পর্যন্ত। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের সম্পর্কে খোঁজখবর করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy