কাজেন্দ্রকুমার রায় ওরফে গুঞ্জন। —নিজস্ব চিত্র।
কয়েকজন নীতি পুলিশের শাসনে অতিষ্ট হয়ে আত্মঘাতী হলেন বছর কুড়ির এক যুবক। শনিবার রাতে চাকদহের মহেশচন্দ্রপুর গ্রামের ওই ঘটনায় কাজেন্দ্রকুমার রায় ওরফে গুঞ্জন নামে এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযোগ, স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যদের শাসানিতে লজ্জিত ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন।
ওই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে ক্লাবের কয়েকজন সদস্য ও পড়শি এক মহিলার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।’’
স্থানীয় একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র গুঞ্জনের সঙ্গে পড়শি গ্রামের এক কিশোরীর সম্পর্ক ছিল। এ দিন বিকেলে ওই কিশোরী গুঞ্জনদের বাড়িতে আসে। ওই ছাত্রের বাড়িতে সেই সময় কেউ ছিলেন না। তাঁর বাবা কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন। মা ও দিদি দুপুরে পাশের গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, পড়শি এক মহিলা বিষয়টি পাড়ার ক্লাবের সদস্যদের জানায়। এরপরই ক্লাবের কয়েকজন সদস্য গুঞ্জনের বাড়িতে হানা দেয়। তারা ওই যুবক ও তার বান্ধবীকে জোর করে ক্লাবে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেখানে ওই দু’জনকে পাশাপাশি ছবি তোলা হয়। তারপরই টাকা আদায়ের ফন্দি আঁটে ওই যুবকেরা।
অভিযোগ, তারা গুঞ্জনের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা দাবি করে বলে, টাকা না দিলে তাদের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তড়িঘরি গুঞ্জন বাড়ি থেকে চার হাজার টাকা নিয়ে এসে জানান, বাকি টাকাটা সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তিনি দিয়ে দেবেন। তারপরই ক্লাবের সদস্যেরা তাঁদের ছেড়ে দেয়। বাড়ি ফিরে আসেন গুঞ্জন। পিছু পিছু ওই কিশোরীও গুঞ্জনের বাড়িতে আসে। ওই কিশোরী জানায়, বাড়ি ফিরেই গুঞ্জন একটি ঘরে ঢুকে যায়। বার বার ঘা দেওয়া সত্ত্বেও সে দরজা খোলেনি। তারপর ওই কিশোরী চিৎকার শুরু করে। ইতিমধ্যে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ওই যুবকের মা ও দিদি বাড়ি ফিরে আসেন। পড়শিরাও চিৎকার শুনে ভিড় করেন। লোকজন বার বার দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন। কিন্তু কোনও ভিতর থেকে কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি। বাধ্য হয়ে লোকজন দরজা ভাঙেন। ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ দেখে পুলিশকে বিষয়টি জানান পাড়ার লোকজন। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy