Advertisement
১৮ মে ২০২৪
ঝড়ে ভাঙল জল-সীমা
Yemen

ইয়েমেন থেকে গ্রামে ফিরছেন হিরণ শেখ

বিনা অনুমতি বিদেশী জাহাজের অনুপ্রবেশ দেখে জাহাজের সব নাবিককে আটক করে ওই দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী। তার পরেই বিচারাধীন বন্দি হিসেবে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় সে দেশের রাজধানী সানার সংশোধনাগারে। জাহাজের ১৪জন নাবিকের কেউ গোয়া, কেউবা কেরলের বাসিন্দা। হিরণ ছিলেন একমাত্র বাঙালি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১৭
Share: Save:

সামুদ্রিক ঝড়ে পথ হারিয়ে মালবাহী জাহাজটি ভিড়েছিল পশ্চিম এশিয়ার ইয়েমেনের উপকূলে। কিন্তু বৈধ অনুমতি না থাকায় ইয়েমেন সরকার ওই জাহাজের ১৪জন ভারতীয় নাবিককে আটক করে। প্রায় ১০ মাস ইয়েমেন সংশোধনাগারে বন্দি থাকার পরে গত ২৮ নভেম্বর ওই নাবিকেরা দেশে ফেরার অনুমতি পেয়েছেন। ১৪জন নাবিকের মধ্যে রয়েছে এবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার শেখ হিরণ। রবিবার টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘ টালবাহানার পরে আজই মুম্বইয়ে নেমেছি।’’

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মারফত তাঁরা জানতে পারেন ইয়েমেনের সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন ওই ১৪জন নাবিক। এর পরেই দূতাবাস মারফত তাঁদের মুক্ত করার চেষ্টা শুরু হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি ওমান থেকে সৌদি আরবে যাওয়ার পথে সামুদ্রিক ঝড়ে দিগ্ভ্রষ্ট হয়ে ওই জাহাজটি ইয়েমেনের জলসীমা ভেঙে ঢুকে পড়েছিল সেদেশের উপকূলে। এলাকাটি ইয়েমেন সরকার ‘যুদ্ধাঞ্চল’ বলে চিহ্নিত করে রেখেছিল বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে। সেখানে বিনা অনুমতি বিদেশী জাহাজের অনুপ্রবেশ দেখে জাহাজের সব নাবিককে আটক করে ওই দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী। তার পরেই বিচারাধীন বন্দি হিসেবে তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় সে দেশের রাজধানী সানার সংশোধনাগারে।

জাহাজের ১৪জন নাবিকের কেউ গোয়া, কেউবা কেরলের বাসিন্দা। হিরণ ছিলেন একমাত্র বাঙালি। প্রায় দশ মাস ছেলের সঙ্গে যোগাযোগহীন হিরণের মা লাভলি বিবি ভরতপুরের তালগ্রামের বাড়িতে বসে বলেন, ‘‘আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম ছেলে আর নেই। মাস কয়েক পরে খোঁজ পেলাম। তার পর থেকে অপেক্ষা।’’

দীর্ঘ ওই দশ মাস ওই জাহাজ সংস্থার পক্ষ থেকে হিরণকে বেতন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তালগ্রামের দুস্থ ওই পরিবারে হিরণ একমাত্র রোজগেরে। ফলে এই সময় নুন আনতে পান্তা ফুরনো দশা হয়েছিল লাভলি বিবিদের। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে মতিউর রহমান বলেন, ‘‘ওদের দেশে ফেরানোর জন্য হাইকমিশনে যোগাযোগ করি। এই দশ মাস কম লড়াই করতে হয়নি।’’ হিরণ জানান, সৌদি আরব যাওয়ার পথে সাগরে ঝড়ে চোখের সামনে একটি জাহাজ ডুবে যেতে দেখেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘ওই জাহাজের নাবিকদের উদ্ধার করে আমাদের জাহাজটি ইয়েমেনের দিকে ভেসে গিয়েছিল।’’ তবে সেদেশের রক্ষীরা জলসীমা ভাঙাকে রেয়াত করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Yemen foreign department Ship
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE