Advertisement
২১ মে ২০২৪

দেরি হওয়ায় মীরের অনুষ্ঠান ভন্ডুল, কোচবিহারে ভাঙচুর চালালেন দর্শকরা

তখন সন্ধ্যা ৬টা। ঘোষণা হয়েছিল অভিনেতা-সঞ্চালক মীরের অনুষ্ঠান শুরু হবে। সেই মতো টিকিটও বিক্রি করা হয়। কয়েকশো দর্শক নির্ধারিত সময়ে কোচবিহার ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হাজির হন। কথা ছিল, সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে। কিন্তু রাত আটটা পেরিয়ে গেলেও অনুষ্ঠান শুরু না হওয়ায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে দর্শকদের। তার আগেই উধাও উদ্যোক্তারা। শুরু হয় ভাঙচুর। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১০
Share: Save:

তখন সন্ধ্যা ৬টা। ঘোষণা হয়েছিল অভিনেতা-সঞ্চালক মীরের অনুষ্ঠান শুরু হবে। সেই মতো টিকিটও বিক্রি করা হয়। কয়েকশো দর্শক নির্ধারিত সময়ে কোচবিহার ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হাজির হন। কথা ছিল, সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠান শুরু হবে। কিন্তু রাত আটটা পেরিয়ে গেলেও অনুষ্ঠান শুরু না হওয়ায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে দর্শকদের। তার আগেই উধাও উদ্যোক্তারা। শুরু হয় ভাঙচুর। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও আয়োজক সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অনুষ্ঠানের ব্যানারে যে দু’টি মোবাইল নম্বর লেখা ছিল, সেই দু’টিই রাত পর্যন্ত বন্ধ ছিল। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “আয়োজকদের খোঁজ করা হচ্ছে। ওই ব্যাপারে প্রতারণার মামলা করা হবে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন অনুষ্ঠানের জন্য ১৫০, ২০০ ও ৩০০ টাকায় টিকিট বিক্রি করা হয়। প্রায় পাঁচ শতাধিক দর্শকও স্টেডিয়ামে হাজির হন। কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পরেও মীর মঞ্চে আসেননি। তারপরেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় উদ্যোক্তাদের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মীরও। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে মীর বলেন, “আমি এদিন বিকেল সাড়ে ৪ টা নাগাদ কোচবিহারে পৌঁছয়ই। ব্যান্ডের লোকেরা স্টেডিয়ামে যান। তার মধ্যেই উদ্যোক্তারা বেপাত্তা হয়ে যান। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি পুলিশের কাছে উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাব।” সেই সঙ্গে মীরের অভিযোগ, আয়োজকরা টাকাও মেটাননি। কিন্তু মীর নিজে কেন অনুষ্ঠানে গেলেন না? মীর বলেন, ‘‘বাগডোগরায় নামার পরেও কিছু আঁচ পাইনি। উদ্যোক্তারা আমাকে কোচবিহারে নিয়ে আসেন। কিন্তু চুক্তি মতো টাকা দেননি। হোটেলে তোলার পরে উদ্যোক্তারা আমার সঙ্গে কোনও যোগাযোগও রাখেনি। খবর পেয়েছিলাম, উদ্যোক্তারা পালিয়েছেন। তাই আর যাইনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমার জীবনে এমন ঘটনা এই প্রথম।’’

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ দর্শকরা। ফালাকাটা কলেজের শিক্ষক রঞ্জন রায় বলেন, “টিকিট কেটে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু অনুষ্ঠান হল না। টাকাও ফেরত পেলাম না।” কোচবিহারের সুবীর বিশ্বাস, রবীন বর্মন, অসীম দাসরা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে মাইকে অনুষ্ঠানের কথা প্রচার করা হচ্ছিল। কিন্তু উদ্যোক্তারা এ ভাবে উধাও হয়ে যাবেন তা কেউ ভাবেননি। তাঁদের দাবি, ‘‘কারা অনুষ্ঠান করছে, তা পুলিশ-প্রশাসন আগে থেকে দেখলে এমনটা হত না।” প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দিনহাটা ও কোচবিহারের বাসিন্দা একদল যুবক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

দর্শকদের অভিযোগ, কোচবিহার ইন্ডোর স্টেডিযামের তদারকি করতে য়াম প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ন্ত্রিত বিশেষ কমিটি রয়েছে। ওই কমিটিই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য স্টেডিয়াম ভাড়া দেয়। এক্ষেত্রে ওই ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রেও সেভাবে আগাম খোঁজখবর নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এ যাঁরাই ওই কাজ করে থাকুন, তাঁরা ঠিক করেননি।” ক্যাম্পাস নাট্যগোষ্ঠীর দেবব্রত আচার্য বলেন, “এই ঘটনা কোচবিহারের পক্ষে অপমানজনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE