সৌরভ চক্রবর্তী।
প্রার্থী নিয়ে জলপাইগুড়িতে তৃণমূলে দ্বন্দ্ব চলছেই। একই আসনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন দলের নানা গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা। পরিস্থিতি এমনই যে জেলা সভাপতির অনুরোধেও কাজ হচ্ছে না। শনিবার জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর সামনেই এক আসনে দু’জন প্রার্থী মনোননয়ন জমা দিলেন। তা নিয়ে দাবি-পাল্টা দাবি চলল দলের নানা গোষ্ঠীতে।
এ দিন রাজগঞ্জের একটি জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন দিয়েছেন রণবীর মজুমদার। সে সময় দলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীও সদর মহকুমাশাসকের দফতরে ছিলেন। সে সময়েই রাজগঞ্জের ওই আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে চলে আসেন উত্তরা বর্মন। তিনি ওই আসনেই বিদায়ী সদস্যা। এতে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়ে যান জেলা নেতৃত্ব। খবর পেয়ে উত্তরা বর্মনকে মনোনয়ন জমা না দিতে অনুরোধ করেন সৌরভবাবু। মহকুমাশাসকের অফিসে এলেও জেলা সভাপতির অনুরোধে মনোনয়নের টেবিলের সামনে আর এগোননি উত্তরাদেবী। কিন্তু সৌরভবাবু অফিস থেকে চলে যেতেই মনোনয়ন জমা দেন তিনি।
এ দিনই জলপাইগুড়ি সদরের একটি আসনেও দ্বিতীয় মনোনয়ন জমা পড়েছে। গত শুক্রবার জলপাইগুড়ি সদরের ৮ নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন গীতা দাস রাজবংশী। দলের তরফে তিনিই প্রার্থী বলে দাবি করেন। শনিবার ওই আসনেই মনোনয়ন জমা দেন তৃণমূল নেত্রী যূথিকা রায় বাসুনিয়া। পঞ্চায়েত স্তর থেকেই এ ভাবে প্রার্থী হওয়া নিয়ে টানাপড়েন চললেও সৌরভ অবশ্য বলেন, “রাজ্য নেতৃত্ব যাঁদের নাম ঠিক করে দিয়েছে, তাঁদেরকেই দলের টিকিট দেওয়া হবে। এটাই দলের সিদ্ধান্ত।”
তৃণমূল অন্দরের খবর, রাজগঞ্জের প্রার্থী হিসেবে রণবীরের নাম যুব সংগঠনের তরফে প্রস্তাব করা হয়। রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তাতে সম্মতও হন জেলা নেতৃত্ব। তারপরেও জেলা নেতৃত্বের একাংশের প্রশ্রয়েই গতবারের বিজয়ী প্রার্থী উত্তরাদেবীকে মনোনয়ন দিয়েছেন বলে অভিযোগ যুব তৃণমূলের। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য নেতৃত্ব রণবীরের নাম অনুমোদন করেছেন। তার পরেও অন্য কেউ প্রার্থী দেওয়ার সাহস কী করে পেল দেখতে হবে। জেলা তৃণমূল সভাপতি দ্রুত পদক্ষেপ করবেন।’’
এ দিকে শনিবার সদরের আসনে মনোনয়ন দেওয়া যূথিকাদেবীর নেপথ্যে জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মনের অনুগামীরা রয়েছেন বলে জল্পনা চলছে দলের অন্দরে। বিজয়বাবু অবশ্য তাকে ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, “এমন কথার মানেই হয় না। যারা এ সব বলছেন তাঁরা কোনও প্রমাণ দেখাতে পারবেন?’’ সেই সঙ্গে সাংসদের সংযোজন, “যে বা যাঁরা মনোনয়ন দিচ্ছেন তাঁরা নিশ্চয়ই দলের কোথাও কথা বলেই দিচ্ছেন। কোনও ভুল নেই। এখনও প্রত্যাহারের সময় বাকি। দল যাঁকে নির্দেশ দেবেন সেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন।” মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য বাকি রয়েছে এক দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy