Advertisement
১৮ মে ২০২৪

প্রতিবন্ধকতা হারিয়ে যোগাসনে জাতীয় সেরা দিনহাটার মৌসুমী

জাতীয় যোগাসন প্রতিযোগিতায় সেরা নির্বাচিত হল দিনহাটার বাসিন্দা মূক ও বধির কিশোরী মৌসুমী সূত্রধর। রাজ্য যোগাসন সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছে মৌসুমী।

মৌসুমীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র

মৌসুমীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২০
Share: Save:

জাতীয় যোগাসন প্রতিযোগিতায় সেরা নির্বাচিত হল দিনহাটার বাসিন্দা মূক ও বধির কিশোরী মৌসুমী সূত্রধর। রাজ্য যোগাসন সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছে মৌসুমী।

হাওড়ার শৈলেন মান্না স্টেডিয়ামে হওয়া ওই প্রতিযোগিতায় ২০টি রাজ্যের প্রতিযোগীরা যোগ দিয়েছিলেন। ১০-১২ সেপ্টেম্বর হয় ওই প্রতিযোগিতা। মূক ও বধিরদের জন্য নির্দিষ্ট ওই বিভাগে মহারাষ্ট্র, মণিপুর, ঝাড়খন্ড, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের ৫০ জন প্রতিযোগীর মধ্যে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখায় সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরী। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা, হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী প্রমুখ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘মৌসুমীর সাফল্য অত্যন্ত গর্বের ব্যাপার।’’ যে কোনও প্রয়োজনে মৌসুমীর পাশে তিনি দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন। মৌসুমীর এই সাফল্য অন্যদের অনুপ্রেরণা দেবে বলে জানান দিনহাটার মহকুমা শাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ।

খুশির হাওয়া দিনহাটা মহামায়াপাট ব্যায়াম বিদ্যালয়েও। সেখানেই প্রায় আট বছর ধরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে মৌসুমী। বিদ্যালয়ের তরফে কয়েকমাস আগে বিশ্ব যোগাসন দিবসের অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রতিযোগিতার জন্য ডাক পাওয়া মৌসুমীকে সংবর্ধনা জানান হয়। তখন থেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন প্রশিক্ষকরা। উৎসাহ ছিল সতীর্থদের মধ্যেও। আট বছর ধরে সকাল, বিকেল দুই বেলা রুটিন মেনে নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিয়েছে মৌসুমী। ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে ধারাবাহিক অনুশীলনেই জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নপূরণ সম্ভব হয়েছে বলে জানাচ্ছেন দিনহাটা ময়ামায়াপাট ব্যায়াম বিদ্যালয়ের সচিব বিভুরঞ্জন সাহা। এতটা পথ সহজ ছিল না মৌসুমীর জন্য। পরিবারের আর্থিক অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত। অনুশীলন চালিয়ে যেতে কোনও স্পনসর বা সরকারি সাহায্য দরকার বলে জানিয়েছেন বিভুরঞ্জনবাবু।

দিনহাটার সারদাপল্লির দিদার বাড়িতে থাকে মৌসুমী। তার মা দিনমজুরি করে সংসার চালান। অভাব নিত্যসঙ্গী হলেও শারীরিক সমস্যার জন্য মৌসুমীকে ব্যায়ামে ভর্তি করান বাড়ির লোকেরা। নাতনির সাফল্যে খুশি দিদা জ্যোৎস্না সাহা। কিন্তু পারিবারিক অবস্থা চিন্তায় রেখেছে তাঁকেও। কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংসদের কার্যকরি সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘মৌসুমী ফিরলে সংবর্ধনা জানানো হবে।’’ যোগাসন চর্চায় আর্থিক সমস্যা যাতে বাধা না হয় সে ব্যাপারে পর্ষদের তরফে পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস জানিয়েছেন পার্থপ্রতিমবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE