ফাইল চিত্র।
তখন কোনও দুর্গাপুজো হত না কার্শিয়াঙে। তিনধারিয়ায় আয়োজন হত পুজোর। তখন দশমীর দিন কার্শিয়াঙ রেলস্টেশনে আসত সেই প্রতিমা। কার্শিয়াঙের বাঙালিরা সেখানে গিয়ে দেবী প্রতিমা দর্শন করে মাকে বরণ করতেন। পরে বাঙালি সঙ্ঘের হাত ধরে পুজো শুরু হয় রাজরাজেশ্বরী হলে। সেই পুজোই এ বছর পা দিচ্ছে ১০২ বছরে।
আগে হলে বসেই দুর্গা প্রতিমা বানাতেন মৃৎশিল্পীরা। পুরনো বাসিন্দারা জানান, দোতলার ব্যালকনিতে বসে পুজো দেখতেন তাঁরা। আর পুরুষরা বসতেন একতলায়। পুজোর দিনগুলিতে নারী ও পুরুষের প্রবেশপথ ছিল আলাদা। পুজো শেষে বিসর্জনের দিন কুলিদের কাঁধে চাপিয়ে বাজার, বর্ধমান মহারাজার শিবমন্দির ঘুরিয়ে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হত।
গত বছর পাহাড়ে একটানা বন্ধের সময় এই হলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। সেবার কোনওমতে বাঁশ, কাপড় দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হয়েছিল। ছোট প্রতিমা আনিয়ে পুজো করেছিলেন উদ্যোক্তারা। এখন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ নতুন ভাবে গড়ে তুলছেন হলটি। বরাবর রাজরাজেশ্বরী হলের পুজোতে মালদহ থেকে ঢাকি আসে। যদিও গত বছর স্থানীয় একজনকে দিয়ে ঢাকির কাজ চালানো হয়েছিল। তবে এ বছর মালদহ থেকেই ঢাকি আসবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
এখন পাহাড় স্বাভাবিক ছন্দে রয়েছে। তাই বড় মূর্তির বায়না দিয়ে পুজো করতেই কোমর বাঁধছেন উদ্যোক্তারা। বরাবরই দর্শনার্থীদের মণ্ডপে বসিয়ে পুজোর ভোগ খাওয়ানো হয়। অষ্টমী পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা গড়ে চারশো থেকে পাঁচশো হয় বলে জানান উদ্যোক্তারা। নবমীতে আরও বেশি হয়ে যায়। পুজো কমিটির সম্পাদক সোমশুভ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব সম্প্রদায়ের মানুষ এই পুজোয় যোগ দেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তোলা হয়।’’ প্রতিমা বিসর্জনের পরে রাজরাজেশ্বরী হলে বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠানও হয়। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে এসে সঙ্গীত পরিবেশন করে গেছেন দিলীপকুমার রায়, পন্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের মত বিশিষ্টজনেরা। এ বছরও বসবে নাচ, গান আর কবিতার আসর। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত চলবে মহিলা আর শিশুদের নিয়ে নানা প্রতিযোগিতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy