মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন তাঁর অনুগামীরা। কেন একজন সংখ্যালঘু নেতাকে সভাধিপতি করা হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন তাঁর অনুগামীদেরই কয়েকজন। দিন কয়েক আগে কলকাতায় দলের কোর কমিটির বৈঠকে সে প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করেছিলেন তাঁকে। সোমবার কোচবিহার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব পেলেন সেই বিতর্কিত প্রবীণ তৃণমূল নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ। এ দিন কর্মাধ্যক্ষ গঠনের পরে হাসিমুখে জেলা পরিষদ থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “দল যখন যা দায়িত্ব দিয়েছে পালন করেছি। এই প্রথম ভোটে জিতে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হয়েছি। আজ অন্যরকম লাগছে।”
সেই সঙ্গে এ দিন জলিল আহমেদ যোগ করেন, “রবি (মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ) দলের হোল টাইমার আর আমি সেকেন্ড টাইমার। দু’জনেই তো দিনভর দলের জন্যই দৌড়ে বেড়াই।” সভাধিপতি গঠনের দিন যে ঘটনা ঘটেছিল, তা একেবারেই ঠিক হয়নি বলে তিনি এদিনও জানান। তাঁর কথায়, “কয়েকজকন আবেগে এমনটা করেছে। তাঁদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।” দলীয় রাজনীতিতে আব্দুল জলিল আহমেদ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। শুধু পূর্ত নয়, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ গঠনে সব দফতরেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর অনুগামীদেরই চেয়ার দেওয়া হয়েছে বলে, দলের অন্দরেই একটি গোষ্ঠী অভিযোগ তুলেছেন। যদিও প্রকাশ্যে তা নিয়ে কেউ কিছু বলতে চাননি। রবীন্দ্রনাথবাবুকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে, তিনি বলেন, “আমার অনুগামী বলে কিছু নেই। সবাই দলের অনুগামী, নেত্রীর অনুগামী। তাঁরাই কর্মাধ্যক্ষ হয়েছে। এ সব অভিযোগ উঠতেই পারে না।”
কোচবিহারে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। সেই লড়াই পৌঁছে গিয়েছিল জেলা পরিষদেও। জেলা পরিষদের সভাধিপতি হন উমাকান্ত বর্মণ। তিনি বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণের ঘনিষ্ঠ। ওই পদের অন্যতম দাবিদার ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আব্দুল জলিল আহমেদ। এর পরেই কর্মাধ্যক্ষ পদ নিয়ে লড়াই শুরু হয়। তৃণমূলেরই একটি গোষ্ঠীর অভিযোগ, সেখানে জেলা সভাপতি নিজের অনুগামীদেরই অগ্রাধিকার দেন। সে জন্য স্থায়ী সমিতি গঠনের দিন এবং সোমবারও দলে রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত অন্য বিধায়কদের কেউ জেলা পরিষদে যাননি। যদিও দলের একটি অংশের দাবি, এ দিন বিধায়ক বা অন্য কোনও নেতার প্রয়োজন ছিল না। সে কারণেই কেউ যাননি। কোচবিহারের সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “কোথাও কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy