Advertisement
১৮ মে ২০২৪

স্টোরে মজুত, তবু কম্বল পান না রোগীরাই

স্টোরে মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত কম্বল। তবু ওয়ার্ড গুলিতে কম্বলের সংখ্যা হাতেগোনা। এবং সেই গুটি কয়েক কম্বলও গায়ে চাপানোর যোগ্য নয় বলে অভিযোগ। ফলে শীতের মরসুমে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের ভরসা বাড়ি থেকে আনা কম্বলই।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৮
Share: Save:

স্টোরে মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত কম্বল। তবু ওয়ার্ড গুলিতে কম্বলের সংখ্যা হাতেগোনা। এবং সেই গুটি কয়েক কম্বলও গায়ে চাপানোর যোগ্য নয় বলে অভিযোগ। ফলে শীতের মরসুমে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের ভরসা বাড়ি থেকে আনা কম্বলই। স্টোরে থাকলেও ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত কম্বল না থাকায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রোগীর আত্মীয়রা।

বাড়ি থেকে হাসপাতালে কম্বল না নিয়ে হাসপাতালে আসায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে বলে জানালেন হবিবপুরের মধ্যমকেন্দুয়ার বাসিন্দা রাকেশ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির লোকেরা সঙ্গে কম্বল আনতে ভুলে গিয়েছিলেন। ওয়ার্ড কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হলে তারা জানান হলে বাড়ি থেকে কম্বল নিয়ে আসতে হবে। ফলে আমাকে চার ঘন্টা শীতের মধ্যে পাতলা জামা পড়েই কাটাতে হয়।’’

এদিকে, কম্বল পেলেও গায়ে চাপাতে পারেননি সুজাপুরের নাসিমুল শেখ। তিনি বলেন, ওয়ার্ডের মেঝেতে পড়েছিল কম্বল। সেই কম্বল তুলেই আমাকে গায়ে দেওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছিল। দুর্গন্ধ ওই কম্বল গায়ে চাপালে সুস্থ হওয়া তো দুরের কথা আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে হবে।’’ যদিও রোগীদের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই হাসপাতালের সুপার তথা সহ অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘কম্বল নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। স্টোর রুমে পর্যাপ্ত কম্বল মজুত রয়েছে। এছাড়া নিয়মিত কম্বল পরিস্কার করে রোগীদের দেওয়া হয়। তবে রোগীরা কেন সেই কম্বল পাচ্ছেন না তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হবে।’’

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে,এই মুহূর্তে হাসপাতালের স্টোর রুমে মজুত রয়েছে দেড় হাজার কম্বল। প্রতিটি ওয়ার্ডেও পর্যাপ্ত কম্বল মজুত রয়েছে। হাসপাতালে দৈনিক গড়ে প্রায় ছ’শো রোগী ভর্তি থাকেন। তারপরেও কেন ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত কম্বল নেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জানা গিয়েছে, মেল ও ফিমেল মেডিক্যাল, দু’টি সার্জিক্যাল, প্রসুতি বিভাগ, সংক্রমণ বিভাগ গুলিতে কোথাও ২০টি আবার কোথাও ২৫টি করে কম্বল রয়েছে। মেল মেডিক্যালের এক কর্মী বলেন, ‘‘রোগীরা কম্বল নোংরা করলে তা পরিষ্কার করতে সময় লেগে যায়। এছাড়া ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত কম্বল দেওয়া হয় না। যার জন্য সমস্ত রোগীকে কম্বল দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।’’কেন ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত কম্বল পাঠানো হচ্ছে না তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে রোগীদের ব্যবহার করা কম্বল তিন থেকে চারদিন অন্তর অন্তর পরিষ্কার করা হয়। তবে অনেক রোগী আচ্ছেন যাঁরা কম্বল নিয়েই বাড়ি চলে যান। যার জন্য ওয়ার্ডে কম্বলের সমস্যা দেখা দেয়।’’ মেডিক্যাল কলেজের কম্বলের সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী। তিনি বলেন,‘‘আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

blanket hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE