মহানন্দার জলস্তর বাড়তেই জলে ডুবেছে মালদহের ইংরেজবাজারের নদীপারের ঘরবাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
এ যেন ‘দুয়ারে’ নদী। কোথাও বিপদসীমা ছুঁইছুঁই, কোথাও চরম বিপদসীমা ছাড়িয়ে ঘরবাড়ি ভাসিয়েছে নদী। সোমবার, এমনই ছবি দেখা গেল গৌড়বঙ্গের তিন জেলা—মালদহ ও দুই দিনাজপুরের নদীপারগুলিতে। বন্যার পাশাপাশি নদী ভাঙনও জেলাগুলিতে শুরু হয়েছে। ফলে, পুজোর মুখে নদীর জলস্তর বৃদ্ধিতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে সাধারণ মানুষের।
যদিও বন্যা ও ভাঙন পরিস্থিতির উপরে নজর রেখে ফ্লাড সেন্টার খোলা হচ্ছে বলে জানান প্রশাসনের কর্তারা। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, “জেলায় ৬৬টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।” বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মালদহ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। তিনি বলেন, “ব্লকগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীও মজুত রয়েছে। পরিস্থিতির উপরে আমাদের নজর রয়েছে।”
শনি ও রবিবার জেলাগুলিতে এ বারের মরসুমে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। তাতেই জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে নদীগুলির। সেচ দফতরের দাবি, মালদহে গঙ্গা, ফুলহার, মহানন্দা নদীর জলস্তর বাড়ছে। বিপদসীমা থেকে নদীগুলি এক থেকে দেড় মিটার নীচে রয়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে দক্ষিণ দিনাজপুরের টাঙন ও পুনর্ভবা নদী। সোমবার আত্রেয়ীর জলে প্লাবিত হয় বালুরঘাট শহরের আত্রেয়ী কলোনি। পুরসভা উৎসব ভবনে ত্রাণ শিবির খুলেছে। পুনর্ভবার বাঁধ ভেঙে গঙ্গারামপুরের হোসেনপুর এলাকায় জল ঢুকছে। জেলা প্রশাসনের দাবি, তৎপরতার সঙ্গে সেচ দফতর নদী বাঁধের ফাটল মেরামতির কাজ শুরু করেছে। জেলায় ৬৬টি ফ্লাড-সেল্টার খুলে প্রায় সাড়ে চার হাজার বানভাসি মানুষকে আশ্রয় দিয়ে খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে বলে জেলাশাসক জানান। জেলার প্রায় ২৬০টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় বাজ পড়ে জেলায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
উত্তর দিনাজপুরে নদীগুলি বিপদসীমার নীচে থাকলেও জলস্তর বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তায় প্রশাসনের কর্তারা।
এ দিন মানিকচকের গোপালপুরে গঙ্গা ভাঙনে নদী পারের কিছু অংশ ভেঙে যায়। নদী ভাঙনে গাজলের চাকনগরের টাঙন নদীর বাঁধ ভেঙেছে। এ দিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। এরই সঙ্গে, পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা গ্রামের কালভার্টের একাংশ ভেঙে যায়। গ্রামবাসীরা নিজেরাই মাটির বস্তা দিয়ে কালভার্ট মেরামত করেন। কুশমন্ডিতে টাঙন নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইসলামপুরের গুঞ্জরিয়া সিরিয়ানি নদীর জল কালভার্টের উপর দিয়ে বইছে। বাঁশের সাঁকোও জলের তলায় চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ইসলামপুর ডাঙাপাড়ার বাসিন্দারা।
‘দুয়ারে’ নদী
(বন্ধনীর ভিতরে বিপদসীমা)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy