Advertisement
০১ মে ২০২৪
Sukanta Majumdar

সব হোটেল ভাড়া করেছে পুলিশই, দাবি সুকান্তের

গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, যাতে তৃণমূল নেতারা প্রচারে যেতে না পারেন, সে জন্য ধূপগুড়ির সব হোটেল বিজেপি ভাড়া করে রেখেছে।

An image of Sukanta Majumdar

ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রচারে খট্টিমারিতে জনসভায় সুকান্ত, শান্তনু, অসীম এবং প্রার্থী তাপসী রায়। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধূপগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৩ ০৭:১৫
Share: Save:

ধূপগুড়িতে থাকার জায়গা পাচ্ছেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার— মঙ্গলবার প্রচারে বেরিয়ে তিনি নিজেই এমন অভিযোগ করলেন। গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, যাতে তৃণমূল নেতারা প্রচারে যেতে না পারেন, সে জন্য ধূপগুড়ির সব হোটেল বিজেপি ভাড়া করে রেখেছে। তার পরের দিনই বিজেপির রাজ্য সভাপতির অভিযোগ, বিজেপি নয়, ধূপগুড়ির সব হোটেল ভাড়া করে রেখেছে পুলিশ। সে কারণে তিনি নিজেই ধূপগুড়িতে থাকতে পারছেন না।

এ দিন সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, “প্রথম দিন আমি জলপাইগুড়ি থেকে ধূপগুড়ি এসেছিলাম। আজ এলাম লাটাগুড়ি থেকে। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তা মিথ্যা। মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশই সব হোটেল ভাড়া করে রেখেছে। বিজেপি যদি সব হোটেল ভাড়া করে রাখত, তা হলে আমাকে ধূপগুড়ির বাইরে গিয়ে থাকতে হত না।’’

জেলা পুলিশের কর্তারা এ নিয়ে মন্তব্য করেননি। তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা আপাতত ভোটের কাজে যাঁদের ব্যবহার করা হবে, সেই আধিকারিকদের বিভিন্ন জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করছেন।

ধূপগুড়িতে ঢোকার দু’দিকের জাতীয় সড়ক ভেঙে গিয়েছে। এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি জাতীয় সড়কের হাল নিয়েও তৃণমূলকে বিঁধেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার রাস্তা বানাচ্ছে। যে নির্মাণ সংস্থাগুলি এ দিকে কাজ করতে আসছে, সেখান থেকে তৃণমূলের লোকেরা কাটমানি চাইছে। সে কারণেই রাস্তার মান ভাল হচ্ছে না। মাঝেমধ্যেই সংস্থাগুলি কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে।’’

তৃণমূল নেতা তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, “বিজেপি কোটি কোটি টাকা ছড়িয়ে ভোট কিনতে চাইছে। ওরা হোটেল, বাড়ি ভাড়া করে রেখেছে।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। ধূপগুড়িতে এত দিন যে উন্নয়নের কাজ হয়েছে, সবই রাজ্য সরকার এবং পুরসভা মিলে করেছে। বিজেপির সাংসদ, বিধায়কেরা ধূপগুড়ির জন্য কী করেছেন সে সব আগে বলুন বিজেপির নেতারা।’’

এ দিন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও ধূপগুড়িতে প্রচার করেছেন। এর আগেও এক দফায় শান্তনু ধূপগুড়িতে এসেছিলেন। তিনি এ দিন পদযাত্রা করেছেন। সভায় তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিএএ নিয়ে যে সব শর্তের কথা বলেছেন, তাতে আমাদের কোনও সম্মানহানি হবে না। কেউ এখান থেকে বিতাড়িত হচ্ছেন না। এই বাংলার সংখ্যালঘু সকলেই এই দেশেই থাকবেন এবং তাঁদের সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকবে। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। সেই আত্মবিশ্বাসে ভরসা রেখেই আমরা বলেছি, মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট আমাদের পক্ষেই রায় দেবেন।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘শান্তনু ঠাকুর কখন কী বলছেন তা তিনি নিজেই জানেন না। আসলে বিভেদের রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি। সে জন্য ভোটের আগে এমন কথা বলা হচ্ছে। আমরা এটুকু বলতে পারি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যত দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন এ সব নিয়ে কারও ভাবার প্রয়োজন নেই। কারণ প্রত্যেকেই ভারতীয় নাগরিক।’’

বিজেপির বিধায়ক অসীম সরকার কবি-গান গেয়ে প্রচার চালান ধূপগুড়ির গ্রামগুলিতে। বুধবার ধূপগুড়িতে আসার কথা বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর।

অন্য দিকে, তৃণমূলের তরফে এখনও চূড়ান্ত হয়েছে ২ সেপ্টেম্বর সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম বা সায়নী ঘোষদের ধূপগুড়িতে প্রচারে আসার কথা থাকলেও, এখনও তা চূড়ান্ত হয়নি। বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতারা এসে যখন ধূপগুড়িতে পড়ে রয়েছেন, তখন তৃণমূলের প্রচারে ‘ওজনদার’ নেতা নেই কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে দলে। এ দিন তৃণমূলের হয়ে প্রচারে এসেছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক এবং আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলে দাবি, দলের পরামর্শদাতা সংস্থার পরিকল্পনা মেনে ‘নিবিড় প্রচার’ চালানো হচ্ছে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, “শেষ মুহূর্তে ওজনদার নেতারা আসবেন। আগে বড় নেতারা এলে কী বলে গেলেন, মানুষ মনে রাখতে পারেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sukanta Majumdar BJP Hotels Dhupguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE