ডিসটেন্স এডুকেশন সেন্টারের আড়ালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল মার্কশিট, সার্টিফিকেট ও অ্যাডমিট কার্ড তৈরি ও বিক্রির কারবার চলছিল দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে৷ কেউ ঘূণাক্ষরেও টের পায়নি৷ কিন্তু শেষ রক্ষা হল না৷ সেখানে হানা দিয়ে চক্রের মূল পান্ডা এক স্কুলশিক্ষক-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি৷
সোমবার বিকেলে জলপাইগুড়িতে এই ধৃতদের মধ্যে একজন বরুণকান্তি রায় ওরফে মানিক ধূপগুড়ির নাথুয়া বানিয়াপাড়া চৌরাস্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক৷ অন্যজন, ভাস্কর সরকার ওই শিক্ষকের সাগরেদ বলেই জানাচ্ছে সিআইডি৷ সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি কদমতলা এলাকায় এডুকেশন সেন্টারটি খুলেছিল বরুণ৷ তবে জাল মার্কশিট, সার্টিফিকেট ও অ্যাডমিট কার্ড তৈরির ঘাঁটি ছিল শহরেরই আদরপাড়ায়৷ সেখান থেকে ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও অন্য মেশিন আটক করেছে সিআইডি৷
সিআইডি জানিয়েছে, বছর খানেক আগে কদমতলা গার্লস স্কুলের কাছে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ডিসটেন্স এডুকেশন সেন্টারটি খোলেন ওই ব্যক্তি৷ যার নাম দেওয়া হয়েছিল জওহরলাল নেহেরু সেকেন্ডারি অ্যান্ড সিনিয়ার সেকেন্ডারি ওপেন এডুকেশন ট্রাস্ট৷ আদরপাড়ায় জাল নথি তৈরির কারখানার জন্যও একটি ঘর ভাড়া নেন ওই ব্যক্তি৷ তবে গোটা কারবারটাই চলতো এডুকেশন সেন্টার থেকে ৷ কারো মনে যাতে কোন সন্দেহ না হয় সেজন্য ডিসটেন্স এডুকেশন সেন্টারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষার ব্যবস্থাও রেখেছিল ওই ব্যক্তি৷ আর তার আড়ালেই চলছিল অর্থের বিনিময়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল মার্কশিট, সার্টিফিকেট কিংবা অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার ব্যবসা।
জানা গিয়েছে, প্রায় এক বছর ধরে ওই শিক্ষক এই কাণ্ড করে এলেও সম্প্রতি সূত্র মারফৎ তা জানতে পারে সিআইডি৷ তারপরই এ দিন প্রথমে কদমতলার সেন্টারটিতে হানা দেয় তারা৷ সেখান থেকে হানা দেওয়া হয় আদরপাড়ার ঘাঁটিতে৷ সেখানে গিয়ে কপালে রীতিমত চোখ উঠে যায়! সিআইডির এক আধিকারিকের কথায়, “ওই কারখানায় জাল জিনিসগুলি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছিল, যে আপাত দৃষ্টিতে তা দেখে বোঝার উপায় নেই যে সেগুলি আসল না নকল৷” যে বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে ওই শিক্ষক এডুকেশন সেন্টারটি খুলেছিলেন, গোটা ঘটনায় হতবাক তারাও৷ ওই বাড়ির এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘বছরখানেক আগে ডিসটেন্স এডুকেশন সেন্টার খোলার জন্য ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন ওই শিক্ষক৷ ওই সেন্টারে অনেক ছেলে-মেয়েও আসতো৷ কিন্তু আড়ালে যে এত বড় চক্র গড়ে উঠেছে তা বুঝতে পারিনি৷’’ ধৃতদের জেরা করে এই চক্রে আর কারা কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা করছে সিআইডি৷ মঙ্গলবার দুজনকে আদালতে তোলা হবে ৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy