এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গোলমালকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল শিলিগুড়ির এনজেপি থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দফায় দফায় স্থানীয় ক্লাবে হামলা, দলীয় দফতর-গাড়ি, স্কুটি ভাঙচুর, হোটেলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় গুরুতর জখম এক জনকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দুই পক্ষের অভিযোগ, পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের সামনেই কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনটি মামলা দায়ের করলেও রাত অবধি কাউকে গ্রেফতার করেনি। এলাকার বিধায়ক তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব শুধু বলেছেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী এবং আইএনটিটিইউসি নেতা প্রসেনজিৎ রায়ের অনুগামীদের মধ্যে গোলমাল হয়। দুই পক্ষ একে অপরের নেতৃত্বে গোলমাল হয়েছে বলে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। দুই নেতাই অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘আইন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য পুলিশ সর্তক রয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত দেড়টা নাগাদ এনজেপি বাজার এলাকার একটি পানের দোকানের সামনে প্রশান্ত দাস নামের এক যুবককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রশান্তবাবু প্রসেনজিৎবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জয়দীপবাবুর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ পৌঁছালে এক অফিসারকে ধাক্কাধাক্কিও করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরে অগ্রণী সঙ্ঘের ভিতরে ঢুকে প্রসেনজিৎবাবু দলবল নিয়ে হামলা চালান বলে অভিযোগ। অগ্রণী সঙ্ঘের সক্রিয় সদস্য জয়দীপবাবু। অভিযোগ, কিছুক্ষণের মধ্যে প্রজেসনজিৎবাবু তৃণমূলে দফতরে হামলা হয়। জানলার কাচ ভাঙচুর করা। সামনে থাকা একটি স্কুটিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই নেতার পরিচিত মানিক দে এবং বিশ্বজিৎ দে নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে জয়দীপবাবুর নেতৃত্বে হামলা হয় বলে অভিযোগ। বিশ্বজিৎবাবুর গাড়িটি ভাঙচুর করা হয়েছে।
জয়দীপবাবু অবশ্য আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে প্রসেজনজিৎবাবু জানিয়েছেন, ‘‘আমার পরিচিত একটা ছেলেকে মারল। আমাদের পার্টি অফিস ও হোটেলে হামলা ছাড়াও পরিচিত এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। জয়দীপ নন্দীর নেতৃত্বে সব হয়েছে। হামলার সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে। উল্টে আমার উপর মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের অনেক সময়ই নীরব থেকেছে। সব দেখে বাসিন্দারা ক্ষেপে গিয়েছেন। দলীয় নেতৃত্বকেও সব জানিয়েছি।’’
এদিনই বিকালে অগ্রণী সঙ্ঘে বৈঠক হয়েছে। তাতে প্রশাসন-পুলিশ এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক না রাখতে না পারলে পুজো করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্লাবের সম্পাদক অমর ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা রাজনীতি করি না। তবে এটা ঠিক, প্রাক্তন কাউন্সিলর আমাদের ক্লাবের সদস্য। শাসক দলের এনজেপি নেতা প্রসেনজিৎ রায় এলাকার কর্তৃত্ব করতে চাইছেন। ক্লাবে হামলা করে ছেলেদের মারধর করেছেন। প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন। পর্যটন মন্ত্রীকে সব জানিয়েছে। উনি ব্যবস্থা না নিলে এবার পুজো হবে না। আমরা এলাকায় বাসিন্দাদের নিয়ে মিছিল করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy