সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
প্রায় পাঁচ মাস আইনি লড়াইয়ের পরে, অবশেষে স্বস্তি পেল দার্জিলিং জেলার সমতলের নাবালিকা ‘নির্যাতিতা’র পরিবার। ধর্ষণে অভিযুক্ত অসমের প্রভাবশালী পরিবারের যুবককে তিন সপ্তাহের মধ্যে শিলিগুড়ির ‘পকসো’ আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অজয় রস্তোগি এবং বি ভি নাগরত্ন ওই নির্দেশ জারি করেছেন। আগাম জামিন বা অর্ন্তবর্তী জামিনের আবেদনও বাতিল করা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশও জারি রেখেছে অভিযুক্তের ‘লুক-আউট’ নোটিস।
এ মামলায় আবেদনকারী ছিলেন ‘নির্যাতিতা’র বাবা। মামলায় যোগ দেয় রাজ্য পুলিশও। দিনেদুপুরে হোটেলে নাবালিকাকে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ ওঠায় শাস্তির দাবিতে নাগরিকেরা সরব হন। কিন্তু অভিযুক্ত অসমের ‘প্রভাবশালী’ পরিবারের হওয়ায়, পুলিশের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠছিল। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা শুনেছি। রায়ের কপি এখনও হাতে আসেনি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২০ মার্চ দার্জিলিং জেলার সমতলের একটি হোটেলে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তরাঁয় গিয়ে অভিযুক্তের সঙ্গে নাবালিকার পরিচয়। সে দিনই ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। ২২ মার্চ মেয়েটির বাবা পুলিশে অভিযোগ করেন। পুলিশ তদন্তে নামতেই অভিযুক্ত শহর ছেড়ে পালায় বলে অভিযোগ। গত ৩০ মার্চ পুলিশ অসমের ধুবুরিতে অভিযুক্তের নাগাল পায়। কিন্তু অসম পুলিশের একাংশের জন্য অভিযুক্তকে হাতে পাওয়া যায়নি এবং জনৈক আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে অভিযুক্তকে থানা ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ জানায় শিলিগুড়ি পুলিশ। এরই মধ্যে গুয়াহাটি হাই কোর্ট থেকে অন্তর্বতী জামিন পায় অভিযুক্ত।
সে জামিনের বিরুদ্ধে ‘নির্যাতিতার’ বাবা সুপ্রিম কোর্টে যান। সেখানে জামিনের মেয়াদ না বাড়িয়ে স্থানীয় ‘পকসো’ আদালতে মামলা চালানোর কথা বলা হয়। এর মধ্যে জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযুক্তের গ্রেফতারি পরোয়ানার জন্য পুলিশ আদালতে যায়। জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন রিপোর্ট তলব করে। অসম পুলিশ ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের মধ্যে ‘টানাপড়েন’ চলতে থাকলেও অভিযুক্তকে শিলিগুড়িতে আনা যাচ্ছিল না। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নির্যাতিতার’ পরিবারের তরফে গাফিলতির অভিযোগ করা হয়। সিআইডি-তদন্তের দাবিতে পরিবারটি কলকাতা হাই কোর্টেও যায়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে, পরিবারটি এখন কিছুটা স্বস্তিতে। পরিবারের তরফে আইনজীবী অভ্রজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘সর্বোচ্চ আদালত আমাদের বিচার দেবে বলে আশাবাদী। আপাতত অভিযুক্তকে পকসো আদালতে হাজির হতে হবে। আমরা বরাবর অভিযুক্তের গ্রেফতারির দাবি তুলেছি। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন।’’ অভিযুক্তের পরিবারের তরফে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy