বাঁশি বাজাচ্ছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
এক পক্ষ গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে ঢুকেছেন। অন্য পক্ষ দলের পতাকা ঝাণ্ডায় লাগিয়ে পৌঁছেছেন। কেউ পুরকর্মীর কাছ থেকে বাঁশি চেয়ে নিয়ে তার স্বরে বাজিয়েছেন।
বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভার বোর্ড মিটিং যেন হট্টমেলার দেশ হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। বাম কাউন্সিলরদের কয়েকজনের বুকে ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে সদ্য দলত্যাগী ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর দুর্গা সিংহের বিরুদ্ধে নানা কথা লেখা ছিল। পক্ষান্তরে, কেন প্ল্যাকার্ড নিয়ে সভাকক্ষে ঢোকা হয়েছে, তার প্রতিবাদে তৃণমূল কাউন্সিলররা দলীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেখানে এক কাউন্সিলর পুরসভার এক কর্মীর থেকে বাঁশি চেয়ে নিয়ে এমন বাজাতে থাকেন যে, কানে আঙুল দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় অনেককে।
কোনও মতে বোর্ড মিটিং শেষ করার পরে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বোর্ড মিটিংয়ে তৃণমূল যা করল, সেটা জবর দখলের রাজনীতি। টাকার লোভে অনৈতিক ভাবে তারা দলত্যাগ করাচ্ছে। শিলিগুড়িতে তা হতে দেব না। যিনি দলত্যাগ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যথার্থই প্রতিবাদ হয়েছে।’’ মেয়রের অভিযোগ, বাঁশি বাজিয়ে, হট্টগোল করে সভা পরিচালনা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। যা ঘটল, তা শিলিগুড়ি পুরসভার ইতিহাসে নজিরবিহীন। চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘বিধানসভাতেও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিরোধীরা যান। স্পিকার তাঁদের নিষেধ করলে তাঁরা রেখে দেন। এখানেও আমি নিষেধ করেছি।’’
বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল অবশ্য মেয়রকে দূষেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মেয়রের নির্দেশে চেয়ারম্যান অগণতান্ত্রিক ভাবে ক্ষমতাসীন দলের কাউন্সিলরদের পোস্টার, প্ল্যাকার্ড-সহ সভায় থাকতে দিয়েছে। আমাদের দলে আসা ওই মহিলা কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে যে সব কথা তাঁরা বলেছেন, তার জন্য ধিক্কার জানাই।’’ কৃষ্ণ পাল, রঞ্জন সরকারের মতো তৃণমূল কাউন্সিলরদের দাবি, বামেরা ২৪ জনকে নিয়ে বোর্ড গড়েন। এখন তা নেই। তারা এ বার আস্থা সভা ডাকুক।
এ দিন দুর্গা সিংহকে নিয়ে মিছিল করে পুরসভায় পৌঁছে দেয় যুব তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল পুরসভার মধ্যে। ইতিমধ্যে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বাম কাউন্সিলরদের কয়েক জন। প্রতিবাদে টেবিল চাপড়ে, মাইক্রোফোন ছুড়ে ফেলে দেন। টেবিলে জলের বোতল আছড়ে, কাচের গ্লাস ছুড়ে হট্টগোল শুরু করেন অন্য পক্ষ। পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন বাম কাউন্সিলররাও। চেয়ারম্যান দিলীপ সিংহের নিষেধে বাম কাউন্সিলররা প্ল্যাকার্ড খুলে ফেলেন। সভাকক্ষে দলীয় পতাকা এনে তৃণমূল কাউন্সিলররা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সভাকক্ষের বাইরেও তৃণমূলের লোকজন স্লোগান দিচ্ছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই সভার কাজ শেষ করে দেন চেয়ারম্যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy