Advertisement
১৭ মে ২০২৪

ইস্তেহার নয়, কোচবিহারে মুখের প্রতিশ্রুতি নিয়েই ভোটে তৃণমূল

ইস্তেহার নয়, মৌখিক ভাবেই উন্নয়নের ফিরিস্তি আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোচবিহার পুরসভায় ভোটের পথে তৃণমূল। নির্বাচনের বাকি রয়েছে আর মাত্র দশ দিন। বাম, বিজেপি ইস্তেহার প্রকাশ করে প্রচারে সামিল। কংগ্রেসের তরফেও পাঁচটি কর্মসূচি পোস্টার ও ব্যানারে ছাপিয়ে তাই ইস্তেহার বলে প্রচার করা হচ্ছে। সেখান কোনও ইস্তেহার না থাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূল নেতা-প্রার্থীদের।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৯
Share: Save:

ইস্তেহার নয়, মৌখিক ভাবেই উন্নয়নের ফিরিস্তি আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোচবিহার পুরসভায় ভোটের পথে তৃণমূল। নির্বাচনের বাকি রয়েছে আর মাত্র দশ দিন। বাম, বিজেপি ইস্তেহার প্রকাশ করে প্রচারে সামিল। কংগ্রেসের তরফেও পাঁচটি কর্মসূচি পোস্টার ও ব্যানারে ছাপিয়ে তাই ইস্তেহার বলে প্রচার করা হচ্ছে। সেখান কোনও ইস্তেহার না থাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূল নেতা-প্রার্থীদের। ইস্তেহার প্রকাশে অসুবিধে কোথায় তা নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন কর্মীদের একাংশ। কিন্তু কোনও ইস্তেহার প্রকাশ হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “কোচবিহারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা কাজ করেছেন সেটাই আমাদের ইস্তেহার। মানুষ তা নিজে চোখে দেখছেন। কোচবিহার পুরসভায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা খরচে জল প্রকল্পের কাজ হচ্ছে।”, বিরোধীরা যে ইস্তেহার প্রকাশ করেছে তা লোক দেখানো বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

কয়েকদিন আগেই বামফ্রন্ট ও বিজেপির তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ইস্তেহার প্রকাশ করা হয়। দুই দলের তরফ থেকেই দুর্নীতি মুক্ত স্বচ্ছ প্রশাসনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বামেদের ইস্তাহারে, এক টাকায় লিজ পাট্টায় খাস জমিতে বসবাসকারীদের জমির অধিকার প্রদান, দূষণ ও যানজট মুক্ত শহর, নিকাশির উন্নয়ন সহ একাধিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিজেপির তরফ থেকেও শহরের উন্নয়নে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বামফ্রন্টের নেতা ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “ইস্তেহার প্রকাশ করে মানুষের সামনে আমরা কি করতে চাই তা তুলে ধরেছি। শাসক দল কি কারণে ইস্তেহার প্রকাশ করতে পারেনি তা তারাই বলতে পারবেন।” বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে বলেন, “দলীয় কোন্দলে জেরবার তৃণমূল। দুর্নীতিতেও জর্জরিত। ওদের শাসন কালে কোচবিহার পুরসভায় একাধিক দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। তাই তাঁদের ইস্তেহার প্রকাশ করার মুখ নেই।” কংগ্রেসের তরফ থেকে দুর্নীতি মুক্ত প্রশাসনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “আমরা পাঁচটি ইস্যু নিয়ে লড়াই করছি। সেটাই আমাদের ইস্তাহার।”

তৃণমূলের অন্দরের খবর, প্রয়াত চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডুকে নিয়ে বিরোধের জেরে ইস্তেহার প্রকাশ নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে তৃণমূল। দলের একটি অংশের তরফ থেকে যেমন দাবি করা হয়েছে, কংগ্রেসের থাকাকালীন বীরেন কুণ্ডুর বিরুদ্ধে উন্নয়নমূলক কাজের টাকা নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার দায়ভার তৃণমূল নেবে না। দলের আরেকটি অংশ আবার বীরেনবাবু কোনও দুর্নীতিতে জড়াননি বলে দাবি করে তাঁরা তাঁকে কর্মবীরের শিরোপা দিয়ে প্রচার করছেন। ইস্তাহার হলে বীরেনবাবুর প্রসঙ্গে কি থাকবে তা নিয়েই বিরোধ চলছে।

দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য বলেন, “এখন বিতর্কের কোনও জায়গা নেই। বীরেনবাবু শহরের উন্নয়নে বহু কাজ করেছেন। মানুষ তা জানেন। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে কিছু অভিযোগ তুলে বাজার গরম করার চেষ্টা হচ্ছে। মানুষই তাঁর জবাব দেবে।” দলের আরেক নেতা বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “বীরেনবাবু যেদিন থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সেদিন থেকে কোনও দুর্নীতি হয়নি। এটা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি। তিনি কংগ্রেসের থাকাকালে কি হয়েছে জানি না। সেই সময়ের দায়িত্ব আমরা নেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE