ভিজে: হঠাৎ বৃষ্টি বালুরঘাটের রাজুয়াতে। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
পথ দুর্ঘটনায় জখম মুমূর্ষুকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার বদলে ডিপোতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাই গাড়ির চালক ও কন্ডাক্টরকে আপাতত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিলো উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার রাতেই বালুরঘাট ডিপোতে ওই দুই পরিবহণ কর্মীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় মালদহ ডিপো কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের রায়গঞ্জ ডিভিশনের ম্যানেজার সুবীর সাহা। তিনি বলেন, ‘‘ওই দুই অস্থায়ী কর্মীকে আপাতত কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালদহ ডিপো থেকে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।’’
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ গাজলের পান্ডুয়াতে গাড়ির ধাক্কায় ভুটভুটি চালক আয়ুব শেখ গুরুতর জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জোর করে মালদহ গামী উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের একটি বাসে তুলে দেন তাঁকে। কিন্তু আশঙ্কাজনক ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে কোনও বাসিন্দাই বাসে ওঠেননি। এমন অবস্থায় ওই বাসের চালক ও কন্ডাক্টরও তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার বদলে প্রথমে বাস টার্মিনাস ও পরে মালদহ ডিপোয় নিয়ে যান। প্রায় দু’ঘণ্টা পর তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল টপকেই টার্মিনাসে যেতে হয়। অথচ মুমূর্ষুকে হাসপাতালের ডিঙিয়ে প্রথমে টার্মিনাসে কেন নিয়ে যাওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদিও গাড়ির চালক ও কন্ডাক্টর দাবি করেন, বাসের মধ্যেই ওই ব্যক্তি নিস্তেজ হয়ে যান। তাই হাসপাতালের পরিবর্তে কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে জেলা জুড়ে। বিতর্কের মুখে পড়েন রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষ। যার পরিপেক্ষিতে আপাতত কর্তব্য থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ওই গাড়ির চালক গৌতম রায় ও কন্ডাক্টর সমীর বর্মনকে। পরিবহণ নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতম বালুরঘাট ও সমীর কোচবিহারের বাসিন্দা। দু’জনই অস্থায়ী কর্মী। বছর তিনেক আগে তাঁরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
কর্তৃপক্ষের একাংশ জানিয়েছেন, গাইড লাইন না থাকলেও, এমন কোনও পরিস্থিতি হলে কিংবা গাড়ির মধ্যে কোনও ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে গেলে মানবিকতার খাতিরে তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে পুলিশকে জানাতে হয়। ওই দুই কর্মী কোনটিই না করায় আপাতত তাঁদের কর্তব্য থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালদহ ডিপোর-ইন-চার্জ গৌতম ধর জানান, রিপোর্ট যথা সময়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy