মেধাবী: নম্রতা জৈন ও বিমল সাহা। নিজস্ব চিত্র
বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। ছেলেকে কলেজে পড়িয়েছেন,এটাই অনেক। টিউশন দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না কখনই। কলেজেও অঙ্কের কোনও স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন না। তারপরেও সব প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্ক অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে সবাইকে চমকে দিলেন বিমল সাহা।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটার বাসিন্দা বিমল চাঁচল কলেজের ছাত্র ছিলেন। কলেজ থেকে এ বার ৫০ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। শুধু তাঁদের মধ্যেই নয়, অঙ্ক অনার্সে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সেরা হয়েছেন অভাবি ঘরের বিমল । বিমলের পাশাপাশি এ বার চাঁচল কলেজ থেকে অ্যাকাউন্টেন্সি অনার্সে প্রথম হয়েছে নম্রতা জৈন। দুই ছাত্রছাত্রীর সাফল্যে খুশির আবহ তৈরি হয়েছে কলেজে। চাঁচল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘দুজনেই মেধাবী ও পরিশ্রমী ছিল। ওদের ফলাফলে কলেজের সুনাম বেড়েছে।’’
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮০০-র মধ্যে বিমল ৬৭৭ ও নম্রতা ৫৩৩ পেয়েছে। অ্যাকাউন্টেন্সির স্থায়ী শিক্ষক থাকলেও এতদিন কলেজে অঙ্কের কোনও স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন না। সম্প্রতি অঙ্কের একজন স্থায়ী শিক্ষক কলেজে যোগ দিলেও বিমল তাঁর কাছে পড়ার সুযোগ পাননি।
তুলসিহাটায় ভাঙাচোরা বাড়ির টালির ছাদের নিচে দুই ছেলেমেয়ে সহ চারজনের সংসার চালাতে হিমশিম খান বিমলের বাবা জহর সাহা। কখনও গম, সরষে ভাঙানো মিলে, কখনও মাঠে দিনমজুরি করেন তিনি। জহরবাবু বলেন, ‘‘দিনমজুরি করে কোনওরকমে সংসার চলে। টিউশন করে নিজের পড়ার খরচ চালাতো বিমল।’’
কিন্তু ভালো ফল করেও এখন দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে তাঁদের। কেননা এত দিন বাড়ি থেকেই চাঁচলে যাতায়াত করতেন। এ বার উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে পড়তে যেতে হলে কী ভাবে খরচে কুলোবে তা ভেবেই দিশেহারা জহরবাবুর পাশাপাশি বিমলও। বিমল বলে, ‘‘এমএসসির পর পিএইচডি করার ইচ্ছে আছে। কী হবে জানি না।’’
চাঁচল থানাপাড়ার বাসিন্দা নম্রতার বাবা মহেন্দ্র জৈন অবশ্য বস্ত্র ব্যবসায়ী। এরপর এমবিএ করতে চান নম্রতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy