ছবি প্রতীকী
পোশাক আধুনিক। কথাবার্তায় অত্যন্ত স্মার্ট। সঙ্গে সুদৃশ্য হাতব্যাগ। ট্রেনের বাতানুকূল কামরা বা বিমানে ছাড়া যাতায়াতই করেন না। বিহার বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে এমএসসিও করেছেন। এমনই এক তরুণীকে মোবাইল চোর সন্দেহে অওয়ধ-অসম এক্সপ্রেস থেকে গ্রেফতার করল এনজেপি রেল পুলিশ! তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ছ’টি দামি মোবাইল। যার সব ক’টি ওই নাকি ট্রেনের যাত্রীদের। এবং সুযোগ বুঝে ওই মোবাইলগুলি ‘চুরি’ করেছিলেন ওই তরুণী।
এই রকম প্রোফাইলের এক জন তরুণী কি সত্যিই মোবাইস চোর? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? পুলিশ এখন সেটাই এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোমবার সকালে গুয়াহাটি থেকে ট্রেনটি এনজেপি স্টেশনে পৌঁছলে ওই তরুণীকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁর সহযাত্রীরা। রেল পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সোনিকুমারী। বছর ২৫-এর ওই তরুণীর বাড়ি বিহারের সিওয়ানে। ট্রেনে বা বিমানে তিনি মামাবাড়ি মেঘালয়ের শিলঙে নিয়মিত যাতায়াত করেন। এই যাতায়াতের সময়ই সুযোগ বুঝে তিনি সহযাত্রীদের মোবাইল ‘চুরি’ করতেন বলে অভিযোগ। রেল পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ট্রেনের এসি-২ কামরায় তরুণী ও তাঁর মা, ভাইয়ের টিকিট ছিল। গুয়াহাটি থেকে বিহারের যাওয়ার জন্য তিনি ট্রেনে চাপেন। রাতের দিকে কামরায় সহযাত্রীদের অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে তিনি ৪টি মোবাইল চুরি করেন বলে অভিযোগ। ওই যাত্রীরা কেউ মোবাইল চার্জে দিয়েছিলেন, কেউ বা সিটে মোবাইল রেখে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন। কেউ বা পাশে রেখে খাবার খেতে ব্যস্ত ছিলেন। পঞ্চম মোবাইলটি একটি চার্জার থেকে খোলার সময় এক যাত্রী তাঁকে হাতেনাতে ধরেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। এর পরে বাকিদের মোবাইল খোয়া গিয়েছে বলে সকলে টের পান। কামরার টিকিট পরীক্ষক, রেল পুলিশকে সব জানানো হয়। পাঁচটি মোবাইল তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়। রেল পুলিশের দাবি, বড় কোনও অপরাধচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন তিনি।
সকালে ট্রেনটি এনজেপি পৌঁছলে যাত্রীরা কোনও অভিযোগ না করলেও তরুণীকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। রেল পুলিশের তরফে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে চমকে ওঠেন রেল পুলিশের অফিসারেরা। ব্যাগের জামা কাপড়ের ভিতর থেকে ছ’টি মোবাইল উদ্ধার হয়। অফিসারেরা জানান, ওই মোবাইলের প্রতিটির দাম ১০-২০ হাজারের মধ্যে। একটি আবার নতুন, প্যাকেটবন্দি। সেটির কোনও ক্যাশমেমোও নেই। কোনও দোকান থেকে মোবাইলটি চুরি করা হয়েছে বলেই পুলিশের ধারণা। ওই তরুণীর কাছ থেকে চেন্নাই-গুয়াহাটির বিমানের টিকিটও মিলেছে।
কিন্তু, একটা অশের ধারণা ওই তরুণী ক্লেপটোম্যানিয়াক নন তো? অন্যের জিনিস না বলে লুকিয়ে বা চুরি করে নিয়ে নেওয়া এবং তা নিজের কাছে রেখে দেওয়ার প্রবণতাকে ক্লেপটোম্যানিয়া বলা হয়। হয়তো সেই কারণেই অন্যের মোবাইল লুকিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েোছিলেন তিনি!
এনজেপি রেল পুলিশের আইসি স্বপন সরকারের দাবি, ‘‘তরুণী কোনও বড় চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। আদালতে পাঠিয়ে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতও নিয়েছি।’’ ধৃতের পরিবারের তরফে অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাঁর বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছেন, মিথ্যে অভিযোগে সোনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ট্রেনে তো বটেই বিমানেও তিনি একই কাজ করে কি না তা জেরা করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy