প্রায় আড়াই বছর আগে কলেজে ঢুকে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারকে নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। দিলীপবাবু তারপর ইস্তফা দিয়েছিলেন। সেই দিলীপবাবুই এখন ফের ওই কলেজে পুরনো পদের জন্য আবেদন করেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, আবেদন গ্রাহ্য হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে অধ্যক্ষ পদে বসতে ইচ্ছুক শিক্ষকদের মধ্যে প্রবীণতম দিলীপবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
দিলীপবাবু কেন সেই দায়িত্ব নিতে আগ্রহী? দিলীপবাবুর দাবি, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে বসার কোনও লোভ নেই। কিন্তু বর্তমান অধ্যক্ষ পদে থাকতে চাইছেন না। কলেজের প্রবীণ ও যোগ্য শিক্ষকদের একটা বড় অংশও এ ব্যাপারে ইচ্ছ্বুক নন। তাই প্রবীণ শিক্ষক হিসেবে কলেজের স্বার্থেই দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছি।” তিনি জানান, রাজ্য সরকার রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা ঘোষণা করেছে। ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি তিনি অবসর নেবেন। চাকরি জীবনের শেষ মুহূর্তে তিনি চান না, কলেজের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হোক। বা পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীতকরণে সরকারি প্রক্রিয়াও ব্যাহত হোক।
স্বচ্ছ ভাবে ছাত্র নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কলেজে ঢুকে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপবাবুকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সভাপতি তিলক চৌধুরী, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তৎকালীন জেলা পর্যবেক্ষক প্রিয়ব্রত দুবে-সহ শাসক দলের একদল কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে। দিলীপবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ তখন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও শুরু করে। ৯ তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতারও করা হয়। তিলকবাবু ও প্রিয়ব্রতবাবু কিছু দিন পরে আত্মসমর্পণ করেন। তারপরেই অবশ্য তাঁরা জামিন পেয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে হইচই পড়ে। এখন দিলীপবাবুকে ফের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তিলকবাবু বলেন, “বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। আমি কিছু বলব না।” তবে প্রিয়ব্রতবাবুর বক্তব্য, “দিলীপবাবুকে নিগ্রহ না করেও আমরা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। কলেজের স্বার্থে তিনি ফের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতেই পারেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy