শিলিগুড়ি পুরসভায় বাম কাউন্সিলরদের অবস্থান। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে শিলিগুড়ি পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে শাসক ও বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের চাপানউতোর তুঙ্গে পৌঁছে গেল।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুর এলাকার ১০২টি প্রকল্পের ঘোষণা করল পুরসভা কর্তৃপক্ষ। বাঘাযতীন পার্কের রবীন্দ্র মঞ্চ থেকে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করেন পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। রাস্তা, নালা, কালভার্ট, সীমানা প্রাচীর, ভবন, সেতু থেকে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস--প্রকল্পের তালিকায় ছিল বহু বিষয়। উদ্বোধন করেই মেয়র জানিয়ে দেন, এতদিন কাজ করতে পারেননি সামর্থ্য ছিল না বলে। এ বার অবশ্য সামর্থ্য রয়েছে বলে জানান মেয়র।
ওই ১০২টি প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। শিলিগুড়ি পুরসভার অন্যতম তৃণমূল কাউন্সিলর তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য মনে করছেন, এই সবই লোক ভোলানো প্রকল্প এবং এগুলি বাস্তবায়িত করা কোনও মতেই সম্ভব নয়। আলাদা ভাবে হলেও সহমত প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা সিপিএমের নুরুল ইসলাম।
ঘটনাচক্রে, এ দিন দুপুরেই পুরসভা থেকে অবস্থান তুলেছেন বামেরা। গত সোমবার দুপুর দুটো থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পুরসভায় অবস্থান করেন বাম কাউন্সিলররা। সোমবার রাতভর দলবেঁধে তাঁরা অবস্থান করেন। এ দিন দুপুর দুটো নাগাদ পুর ভবনের দোতলায় মেয়রের ঘরের সামনের করিডর থেকে বাম কাউন্সিলররা নেমে আসেন। ভবনে ঢোকার মুখে তৈরি অবস্থান মঞ্চে বিরোধী দলনেতা আনুষ্ঠানিক ভাবে অবস্থান কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন। নুরুলবাবু বলেন, “অবস্থান কর্মসূচি শেষ হল। কিন্তু লাগাতার আন্দোলনের সূচনা হল মঙ্গলবার। যে ভাবে শিলিগুড়ি পুরসভার যাবতীয় পরিষেবা ভেঙে পড়েছে, তার বিরুদ্ধে শহর জুড়ে লাগাতার আন্দোলন হবে।” সেই সঙ্গে বিরোধী দলনেতাও বলেন, “পুরসভা ঋণের ভারে জর্জরিত। ওঁদের হাতে টাকা থাকলে এতদিন কাজ করেননি কেন?”
পুরসভা রাতারাতি শতাধিক প্রকল্পের কাজ হবে বলে যে ঘোষণা করেছে তা একেবারেই মিথ্যে প্রচার বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। গৌতমবাবুর দাবি, “পুরসভার নিজস্ব ১০ কোটি টাকা রয়েছে। বাকি টাকা কোথা থেকে আসবে? পুরসভা বর্তমানে ৭৫ কোটি টাকা ঘাটতিতে চলছে। প্রতি বছরে ঘাটতি বাড়ছে ১০ কোটি টাকা করে। পুরসভার পক্ষে কোনওভাবেই সম্ভব নয় কাজ করা। ওঁরা মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছেন।”
মেয়র জানান, পুরসভার নিজস্ব আয় বেড়েছে। তাঁরা দাবি, “প্রত্যেকটি কাজের ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে গিয়েছে। কিছু কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।” বিরোধীদের পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুরসভার পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক। তিনি বলেন, “কোথা থেকে তহবিল আসবে তা আমরা জানি। যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের সবিনয়ে জানিয়ে দিচ্ছি, উন্নয়ন না হলে আমরা কৈফিয়ৎ দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy