সাংবাদিকতা বিষয়টি নিয়ে পড়াশুনায় আগ্রহী হয়েছিলেন ওঁরা। তাই ভর্তি হয়েছিলেন মালদহের গৌড় মহাবিদ্যালয়ের সাংবাদিকতায় অনার্সের পাঠক্রমে। কিন্তু এরপর আর এগোনো হয়নি এই ছাত্র ছাত্রীদের বেশিরভাগেরই। কারণ পাঁচ বছর আগে কলেজ স্তরে অনার্সের পাঠক্রম চালু হলেও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও চালু করা যায়নি সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর পাঠক্রম। গত তিন বছরে এই কলেজ থেকে যে ৪৫ জন ছাত্র ছাত্রী সাংবাদিকতায় স্নাতক হয়েছেন তাঁদের মধ্যে মাত্র চার জন জেলার বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা সমাধানের জন্য কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। গৌড় মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রাণতোষ সেন বলেন, “সাংবাদিকতা বিষয়টি স্নাতকোত্তর স্তরে পঠন পাঠন চালু করা একান্ত প্রয়োজন। বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
২০০৯ সালে পুরাতন মালদহের গৌড় কলেজে সাংবাদিকতা নিয়ে পঠনপাঠন চালু হয়। প্রথমে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকলেও ওই বছরই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসে এই কলেজটি। সাংবাদিকতা অনার্সে প্রথমে ১৫টি আসন ছিল। নিয়োগ করা হয়েছিল একজন পার্ট টাইম অধ্যাপককে। শুরু থেকেই এই বিভাগে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। এখন ১৫টি আসন বেড়ে হয়েছে ১৯। দুইজন পার্ট টাইম এবং একজন চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপিকা নিয়োগ করা হয়েছে। আর তিনটি বর্ষ মিলিয়ে ৫৭ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে গৌর কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগে। ইতিমধ্যে এই কলেজ থেকে তিনটি বর্ষের ছাত্র ছাত্রী স্নাতক হয়ে বেড়িয়ে গেলেও তাদের মধ্যে অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রীই স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির সুযোগ পাননি। কারণ গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতার স্নাতকোত্তর পাঠক্রমই চালু করা হয়নি। তিন বছরে ৪৫ জন পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র চারজন বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন, কারন বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে যখন স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্ত্তির জন্য আবেদন জমা করতে হয়, সে সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলাফলই প্রকাশিত হয় না।তাই বহু পড়ুয়ারই বাইরে পড়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়। অনেকে আবার আর্থিক কারণেও বাইরে পড়তে যেতে পারেননা।এই কলেজের সাংবাদিকতার প্রাক্তন ছাত্র প্রীতম ঘোষ ও প্রাক্তন ছাত্রী নমশ্রী মণ্ডলের কথায়, “সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতক হয়ে বাড়িতে বসে রয়েছি। স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়ার সুযোগ হল না। কারণ আমাদের পক্ষে বাইরে গিয়ে এত টাকা খরচ করে পড়া চালানো অসম্ভব।”
স্নাতকোত্তর পঠনপাঠন চালু না হলে স্নাতক স্তরে পঠনপাঠনও বন্ধ করে দেওয়া হোক, এমনটাই দাবি জানিয়েছেন এই কলেজের সাংবাদিকতার ছাত্র ছাত্রীরা। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন,এই বিষয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা রয়েছে। খুব শীঘ্রই বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করা হবে।” এই শিক্ষাবর্ষ থেকে গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বালুরঘাট কলেজ ও সাউথ মালদা কলেজেও পাসকোর্সে সাংবাদিকতার পাঠক্রম চালু করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy