Advertisement
০২ মে ২০২৪

নিকাশি নালা উপচে জল শীতেও, ক্ষোভ

শীত কালেও নিকাশি নালার উপচে পড়া জলে রাস্তা থইথই করছে। সেই দূষিত, নোংরা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের।

আবর্জনা আর প্লাস্টিকে নিকাশি বেহাল চাঁচলে।

আবর্জনা আর প্লাস্টিকে নিকাশি বেহাল চাঁচলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:৫৯
Share: Save:

শীত কালেও নিকাশি নালার উপচে পড়া জলে রাস্তা থইথই করছে। সেই দূষিত, নোংরা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের। কোনও প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় নয়। মালদহের চাঁচল মহকুমা সদরে জলনিকাশি নালার ওই বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ শহরবাসী। শীতে এই হাল হলে বর্ষায় কী হবে তা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শহরের বাসিন্দারা। পঞ্চায়েত-প্রশাসন নালা পরিস্কার না করায় ওই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশকেই দায়ী করছে প্রশাসন। কোথাও নালার উপরে দোকানপাট গড়ে উঠেছে। কোথাও বাসিন্দাদের একাংশ নালায় প্লাস্টিক থেকে শুরু করে আবর্জনা ফেলায় তা বুজে গিয়ে ওই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে পঞ্চায়েত-প্রশাসনের দাবি। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে শহরের নিকাশি নালা কেন পরিষ্কার করা হচ্ছে না তার সদুত্তর পঞ্চায়েতের কাছে মেলেনি। যদিও সমস্যা মেটাতে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

চাঁচলের মহকুমাশাসক জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘চাঁচলে নিকাশি ঘিরে সমস্যার বিষয়টি নজরে আসতে তা মেটাতে প্রশাসন উদ্যোগী। ১০০ দিন প্রকল্পে নালা পরিষ্কারের আগে কিছু এলাকায় নালার উপর অবৈধ নির্মাণ সরানো জরুরি! সেই প্রক্রিয়া চলছে।’’

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরবাসীর দাবি মেনে রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি চাঁচলে জল নিকািশ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন। এ জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে! পরে বিভিন্ন তহবিল থেকে আরও বরাদ্দ মেলে। শহরের নানা এলাকার জমা জল মরা মহানন্দা নদীতে ফেলার প্ল্যান তৈরি করে ৮ বছর আগে সেই নর্দমা তৈরি হয়।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে নালা তৈরি না হওয়ায় সারা বছর ধরেই বাসিন্দাদের সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। আবার বাসিন্দাদের একাংশ আবর্জনা ফেলায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। বছরভর নোংরা জল ও আবর্জনা জমে থাকা খোলা নর্দমা মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত। পাশাপাশি তা দূষণ ছড়াচ্ছে। কিন্তু পঞ্চায়েত ও প্রশাসন পরিষ্কারে উদ্যোগী না হওয়ায় বারগাছিয়াপল্লি, ট্যান্ডেলপাড়া, খেলেনপুর সহ কিছু এলাকায় নর্দমার জল উপচে রাস্তায় উঠছে। নিকাশি নালা পরিষ্কার নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত কী ভাবছে সেই প্রশ্নও তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা।

পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান নরেশ দাস বলেন, ‘‘পঞ্চয়েতে পৃথক তহবিল নেই যে নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করব। তবুও মাঝেমধ্যে করে থাকি।’’ যদিও ওই যুক্তি মানতে রাজি নন বিরোধীরা। চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের বিরোধী দলনেতা অমিতেশ পান্ডের অভিযোগ, নিজস্ব তহবিলের টাকায় নানা অপ্রয়োজনীয় কাজ পঞ্চায়েত করছে। কিন্তু নর্দমার পরিষ্কারের কথা বলা হলেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খেলেনপুর এলাকায় নালার উপরেই দোকানঘর তৈরি করে ব্যবসা চলছে! তাঁদের স্বেচ্ছায় সরে যেতে বলা হলেও তাঁরা সরেননি। তাঁদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলে গিয়ে ১০০ দিনের প্রকল্পে নর্দমা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ub drainage system
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE