আমার উনি বনাম আমার দাদা।
এক হেঁশেল। একই বাড়ি। ভোটের বৈতরণী পার হতে ভরসাও এক প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি।
প্রিয়বাবুর স্ত্রী রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি ও ভাই তৃণমূলের প্রার্থী সত্যরঞ্জন দাশমুন্সি। দু’জনেই তাঁকে সামনে রেখে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০০৬ সালে গোয়ালপোখর বিধানসভা নির্বাচন থেকেই দীপা প্রিয়বাবুর প্রভাব ও প্রতিষ্ঠা ব্যবহার করছেন। তার পরে প্রিয়বাবু অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাঁরই নির্বাচনী কেন্দ্র রায়গঞ্জে দাঁড়িয়ে স্বামীকে সামনে রেখেই ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জেতেন দীপা। এ বার লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়ে সত্যরঞ্জনও প্রিয়বাবুকে সামনে রেখে প্রচার করবেন বলে তৃণমূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের ডাকে করণদিঘি এলাকার এক প্রেক্ষাগৃহে দলের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তৃণমূল অন্দরের খবর, প্রিয়বাবুকে সামনে রেখে প্রচার চালালে কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকদের ভোট পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, প্রিয়বাবুর ভাই অন্য দলের হয়ে দাঁড়ালেও তিনিই যে প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদের প্রকৃত উত্তরসূরি, তাও প্রচার করবে তৃণমূল।
সত্যরঞ্জনবাবুর ভাল নাম পবিত্ররঞ্জন। গত নভেম্বরে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “দাদা কংগ্রেসের সম্পত্তি নন। বৌদি (দীপাদেবী) দাদার উপর ভর করেই গত লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। অথচ দাদার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি।” তিনি জানিয়েছেন, সেই স্বপ্ন পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েই প্রচার করবেন। তাই প্রিয়বাবুর ছবি নিয়ে প্রচারের ক্ষেত্রেও তাঁর দলের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন সত্যরঞ্জনবাবু। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্যও জানান, প্রিয়বাবুকে তাঁরা রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে রেখে একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করেন। তাই তাঁকে সামনে রেখে প্রচারে কোনও অসুবিধা নেই।
দীপার অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থে তৃণমূল পরিবারের পদবীকে কাজে লাগিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছে। তাঁর কথায়, “যে দল এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য রায়গঞ্জে জমি অধিগ্রহণ না করে প্রিয়বাবুর প্রধান স্বপ্নকেই চুরমার করে দিয়েছে, সেই দল জিততে প্রিয়বাবুর স্বপ্ন পূরণের কথা বলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে॥
এই রাজনৈতিক তরজার বাইরে বৌদি-দেওরের সম্পর্ক বেশ ভাল বলে জানান পরিজনেরা। জেলায় এলে কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনিতে দাশমুন্সিদের পারিবারিক বাড়িতেই থাকেন দু’জনে। দোতলায় থাকেন দীপা। একতলায় অকৃতদার সত্যরঞ্জন। দু’জনের হেঁশেলও এক। রান্না করেন কৃষ্ণ সরকার। তিনি জানান, দু’জনের কেউই আমিষ তেমন পছন্দ করেন না। প্রচারে বেরোনোর সময়ে হাল্কা খাওয়া। ফিরেও তাই। সত্যরঞ্জন অবশ্য রুটি আর টক দই ভালবাসেন। কখনও সখনও মাছ ভাজা। দু’জনেরই পছন্দ মুসুরির ডাল, ভাত আর নানা সব্জির তরকারি। ঝাল মশলা কম থাকে। কৃষ্ণবাবুর কথায়, ‘‘প্রিয়দাদাও একই রকম খেতে ভালবাসতেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy