Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Corruption

Corruption: দুর্নীতির গভীরে যেতে হবে, এক সুর বিরোধীদের

ইডি-র হেফাজতে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যাতায়াতের পথে শুক্রবার পার্থ দাবি করেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২২ ০৫:৩৪
Share: Save:

রাজ্যের মন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার বা সব পদ থেকে অপসারণই যথেষ্ট নয়। সার্বিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিই বজায় রাখছে বিরোধীরা। ইডি-র হেফাজতে থাকা পার্থ সংবাদমাধ্যমের সামনে কী বলেছেন, তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বাম এবং বিজেপি। এক ধাপ এগিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দুর্নীতির বিরুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে গণ-আন্দোলনেরও ডাক দিয়েছেন।

ইডি-র হেফাজতে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যাতায়াতের পথে শুক্রবার পার্থ দাবি করেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাঁকে সাসপেন্ড করার দলীয় সিদ্ধান্ত নিরপেক্ষ তদন্তের পথে বাধা হতে পারে বলে মন্তব্যের পাশাপাশিই তিনি বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্ত ঠিক। এই প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘প্রথমত, হেফাজতে থাকা এক জন ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমের কাছে বা বাইরে কী বিবৃতি দিলেন, তার আইনি মান্যতা নেই। চাইলে তিনি আদালতের কাছে জবানবন্দি দিতে পারেন। এখনও বিধায়ক আছেন। হয়তো ভাবছেন জামিন পেয়ে আবার যদি ফিরে আসা যায়, দরজা খুলে রাখতে চাইছেন।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘সবাই জানে বাংলায় পিসি-ভাইপো’র সিন্ডিকেট চলছে। পার্থ তার ম্যানেজার ছিলেন। পার্থ-অর্পিতা তো ট্রেলর! আসল খেলা দেখতে পাবেন!’’

বিধানসভার বাইরে এ দিন বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, দুর্নীতির এমন প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা এ রাজ্যে অতীতে কোনও সরকারের আমলেই দেখা যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক দিন বিরোধী দল করেছি, তৃণমূলকেও ভাল চিনি। আগে সম্মেলন, কর্মসূচি ও নির্বাচনের সময়ে বিভিন্ন দল টাকা তুলত। কিন্তু এই রকম ফিতে মেপে টাকা তোলা ছিল না! ’’ এই প্রেক্ষিতেই শুভেন্দুর আহ্বান, ‘‘সিপিএম নেতারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বলছেন, আমাকেও গাল দিচ্ছেন, বিজেপির বিরুদ্ধেও বলছেন। সিপিএমের কথার জবাব এখন আমি দিচ্ছি না। এখন এই দুর্নীতির সরকারকে উৎখাত করার জন্য সকলেরই যে যার মতো লড়াই করা উচিত।’’

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার শুভেন্দুকে আক্রমণ করার পাশাপাশি বলেছিলেন, পার্থের ‘ঘনিষ্ঠে’র ঠিকানা থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে। দলের টাকা হলে দলীয় কার্যালয়ে পাওয়া যেত। শুভেন্দু এ দিন পাল্টা বলেছেন, ‘‘দলের টাকা বলেই অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখা হয়েছিল। পার্টি অফিসে রাখা হয়নি।’’

পার্থের এ দিনের বক্তব্যে মমতা ও অভিষেকের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা আছে কি না, সেই প্রশ্নে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ দিন বলেন, ‘‘ভাগ তো আগে থেকেই আছে। মাদার তৃণমূল, যুব তৃণমূল। মুকুল রায়, কুণাল ঘোষ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহদের দেখেছেন পার্থ। হয়তো ভাবছেন, দাম বাড়িয়ে ফিরে আসা যায়! গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই চুরমার হয়ে গিয়েছে। এখন প্রশ্ন হল, গোটা পৃথিবীর কাছে রাজ্যের নাক কেটে দিয়ে উত্তরাধিকারের ফয়সালা হবে? নাকি পিসি-ভাইপো ঘরে বসে সমস্যা মেটাবেন?’’ সেলিমের দাবি, ‘‘এত বড় দুর্নীতি এক জনকে দিয়ে হতে পারে না।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের ভোটার, তাঁরা সৎ। তৃণমূলের সমর্থক, তাঁরা সৎ। তাঁদের সততা, আন্তরিকতাকে তৃণমূলের রথী-মহারথীরা অপব্যবহার করে ধনকুবেরে রূপান্তরিত হয়েছেন। আভি তো স্রেফ ঝাঁকি হ্যায়, বহত কুছ বাকি হ্যায়!’’

পার্থের নির্বাচনী এলাকা বেহালার শীলপাড়া থেকে ট্রাম ডিপো পর্যন্ত এ দিনই বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার ডাকে প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দেন শুভেন্দু। মিছিলে জনসমাগম ছিল চোখে পড়ার মতোই। মিছিলের পথে বেহালা ম্যান্টনে পার্থের দলীয় কার্যালয় পড়লে সেখানে গোবর ও গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধ করেন বিজেপি কর্মীরা। যা নিয়ে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘শুভেন্দু আদর্শের টানে বিজেপিতে যায়নি। সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে গিয়েছে। ওঁর সঙ্গে যে বিজেপি কর্মীরা মিছিল করলেন, তাঁরা আগে গঙ্গা স্নান করে শুদ্ধ হন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Suvendu Adhikari Opposition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE