Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Panchayat Elections

প্রচারের দামামা বাজল জঙ্গলমহলে

রাইপুর ব্লকেই চলতি মাসের প্রথম দিন জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থীর বৈঠকে দুষ্কৃতীদের তিরে বিদ্ধ হয়েছেন দুই কর্মী। পড়শি ব্লক রানিবাঁধে মনোনয়ন পর্বের গোড়ায় খুন হয়েছেন বিজেপি কর্মী।

দক্ষিণ বাঁকুড়ার রাইপুরে বিজেপির রোড-শো। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

দক্ষিণ বাঁকুড়ার রাইপুরে বিজেপির রোড-শো। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রাইপুর শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ২০:৩৩
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটে বাঁকুড়ার অন্য দুই মহকুমা দু’একটি ব্লক বাদ দিয়ে প্রায় বিরোধীশূন্য হলেও খাতড়ার ছবিটা উল্টো। ওই জঙ্গলমহল এলাকায় বিজেপির উত্থান দলের নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। খাতড়ার প্রায় সমস্ত ব্লকেই শাসক-বিরোধী নির্বাচনী টক্কর হতে চলেছে। ভোটের আগে জেলায় প্রচারের লড়াইটাও শুরু হল সেখান থেকেই। বৃহস্পতিবার রাইপুরে রোড-শো করেন বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।

রাইপুর ব্লকেই চলতি মাসের প্রথম দিন জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থীর বৈঠকে দুষ্কৃতীদের তিরে বিদ্ধ হয়েছেন দুই কর্মী। পড়শি ব্লক রানিবাঁধে মনোনয়ন পর্বের গোড়ায় খুন হয়েছেন বিজেপি কর্মী।

জেলা তৃণমূল নেতারা জানাচ্ছেন, এই আবহে আজ, শুক্রবার দক্ষিণ বাঁকুড়ায় আসছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা হওয়ার কথা খাতড়ার কেচন্দায়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাইপুরের মহামায়া মন্দিরে পুজো দিয়ে লকেটের রোড শো শুরু হয়। বিজেপির দাবি, প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা পার হয়ে রাইপুরের হসপিটাল মোড়ে শেষ হয় মিছিল। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র, সহসভাপতি নীলাদ্রীশেখর দানা প্রমুখ। লকেটের দাবি, লোক হয়েছিল প্রায় দশ হাজার। তিনি বলেন, ‘‘রাইপুর ব্লকের মাত্র তিনটি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার মানুষকেই এই মিছিলে থাকতে বলা হয়েছিল। তাতেই এত ভিড় হয়েছে।” সায়ন্তনবাবু বলেন, “খাস রাইপুরে আমাদের জনসমর্থন কতটা বেড়েছে তার আঁচ পাওয়া গেল।” তবে রাইপুর থানার পুলিশের দাবি, এ দিনের রোড-শোতে শ’পাঁচেক লোক হয়েছিল।

বিজেপির এ দিনের প্রচারকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল। জেলা তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের সাধারণ বুথ মিটিং-এ দশ হাজারের বেশি লোক হয়। বিজেপিতো সব জায়গায় নিজের প্রতীকে প্রার্থীই দিতে পারেনি। ওদের মিছিল নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তবে অভিষেকের সভায় এ বার ঐতিহাসিক ভিড় হতে চলেছে।” জেলার যুব তৃণমূল সভাপতি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিষেকের সভাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের আগ্রহ তুঙ্গে।”

এ দিকে, ভিড় টানার চেষ্টার সঙ্গে শুরু হয়েছে বাগযুদ্ধও। বৃহস্পতিবার ইঁদপুরে একটি সভা করেন লকেট। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাস চালিয়ে তৃণমূল ভোটে জিততে পারবে না। সন্ত্রাস যত বাড়বে, আমাদের ভোটও ততই বাড়বে। তবে মারের বদলে মার দিতে হবে, ইটের বদলে পাটকেল।” এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওদের নেতা নেত্রীদের কাজটাই উস্কানি দেওয়া। কখনও ধর্মের নামে অশান্তি বাধায়, কখনও রাজনীতির নামে।” বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তনবাবুর পাল্টা কটাক্ষ, “যখন জেলাশাসকের অফিসে আমাদের রাজ্য নেতাকে গাড়ি থেকে বের করে মারধর করা হল, রানিবাঁধে আমাদের কর্মী খুন হলেন, দলের জেলা অফিসে হামলা হল— তখন উস্কানিটা কারা দিয়েছিল?’’ তৃণমূলের এক জেলা নেতার উত্তর, ‘‘বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই ওই সমস্ত হয়েছে।’’

কথার পিঠে কথা জমছে। এখন অভিষেক খাতড়ায় এসে কী বলেন, সেই দিকেই তাকিয়ে সব শিবির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE