কাশীপুরে মিছিল। নিজস্ব চিত্র
পিঁদাড়ে পলাশের বন, ভোট দিব ভোট দিব মন, ভোট দিব ভাই ১২মে-র সকালে, ভোট দিবার পরে সাত সেকেন্ড ভিভিপ্যাট দেইখে লিব ভাইলে...। ঢাকের তালে তালে মিছিলে হাঁটছেন স্বয়ং ভোটেশ্বর। পুরুলিয়া জেলার ভোটের ম্যাসকট ভোটেশ্বর। ইয়া মোটা তাঁর গোঁফ, মাথা ভর্তি ঝাঁকড়া চুল, পরনে বাঘছাল, পায়ে নাগরা জুতো। মাথায় তাঁর তেরঙ্গা মুকুট, বুকের বর্মে নির্বাচন কমিশনের লোগো। বাঁ হাতের তর্জনীতে ভোটের পরে দেওয়া কালির ছাপ। সেই আঙুল তুলে বীরদর্পে ঢাকের তালে, ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঝুমুর গানের সুরে পা ফেলে ফেলে এগোচ্ছেন তিনি। পিছনে কর্মীদের নিয়ে বিডিও, স্বনির্ভর দলের সদস্য, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আদর্শ আচরনবিধির নজরদারি দলের সদস্যেরা।
শনিবার সকালে এমনই ছবি দেখল কাশীপুর। ভোটেশ্বরকে সামনে রেখে এ দিন চড়া রোদ মাথায় নিয়ে এই মিছিল কল্লোলি, থানা রোড, হাটতলা, রাজবাড়ি মোড়, মধ্যবাজার, দেবীমেলা, রথতলা ছুঁয়ে গোটা কাশীপুর ঘুরে প্রশাসনিক ভবনে শেষ হয়।
পিঁদাড়ে পলাশের বনের মত জনপ্রিয় গানের সুরে ভোটের কথা বসিয়ে ঝুমুরের সুরে লোকশিল্পীদের দল কখনও গাইলেন, ‘দ্বারকেশ্বরের গরম বালি, ভোট দিব হাতে লাগাঁয় কালি’। কখনও বা ধরলেন— ‘লালপাহাড়ির দেশের মাটি, ছৌনাচ হামদের গরব ভোট হামার অধিকার, ভোট হামাদের বড় পরব হে...। সকাল সকাল ভোটটা দিয়ে নিজের সরকার গড় হে...।’
ভোটেশ্বরকে নিয়ে এ দিন এই মিছিলের আয়োজন করেছিল প্রশাসন। বিডিও (কাশীপুর) সুচেতনা দাস বলেন, ‘‘ভোটেশ্বর আমাদের নিজস্ব ম্যাসকট। ছৌনাচ পুরুলিয়ার নিজস্ব সংস্কৃতি। ছৌনাচের মধ্যে যেমন বীররসের ভাব রয়েছে, তেমনি ভোটেশ্বরের মধ্যেও একটা বীরত্বের ভাব রয়েছে। ভোটেশ্বর মানুষজনকে নির্ভয়ে ভোটদানের বার্তা দেন। তাঁর বেশভূষা, হাঁটাচলা সবেতেই সেই বার্তা রয়েছে।’’
এদিন মিছিল থেকে লোকশিল্পীরাও মানুষজনকে গান গেয়ে নির্ভয়ে ভোটদানের বার্তা দিয়েছেন। স্থানীয় লোকশিল্পী সঞ্জয় সূত্রধর, ভুবন বাউরি, স্বপন বাউরি প্রমুখের কথায়, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই ৭০-৭৫টি গ্রাম ঘুরে ঘুরে এ ভাবে গান গেয়ে ভোটদানে উৎসাহ দিতে প্রচার চালিয়েছি।’’
এ দিন ভোটেশ্বরের বেশে যিনি মিছিলে হেঁটেছেন, তিনি নিজেও এক জন সরকারি কর্মী। নাম ভৈরব পরামাণিক। কাশীপুর ব্লক প্রশাসনের ওই কর্মীর কথায়, ‘‘ভোটেশ্বর মানুষকে বলছে ভোটদান এক জন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। কারও কথায় প্রভাবিত না হয়ে প্রত্যেকে নিজের ভোট যেন দেন, সেই বার্তাই সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাইছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy